ফাইল ছবি

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা নিয়োগে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলছে, এখন থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যোগ্য, সৎ ও দক্ষ মানবসম্পদ নিয়োগ দিতে হবে।

পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করে সুশাসনও নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি একই সঙ্গে ব্যবস্থাপনার একাধিক পদে বহাল থাকতে পারবেন না বলে নির্দেশনায় জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অনিয়ম, ঋণ কেলেঙ্কারি, আমানত, তারল্য, মুনাফা, নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সংকটের মধ্যে রয়েছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি এই সংকট আরও বেড়েছে। দিন যত যাচ্ছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিকখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সংকট তত বাড়ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, এখন সিংহভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দশা খুবই করুণ।

এ অবস্থা থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতে নতুন এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে মঙ্গলবার জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যেকোনো স্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, পদোন্নতি ও সার্বিক মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদিত একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন বিভাগের প্রধান, ঋণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবং কোম্পানি সচিব পদে যোগ্যতা ও উপযুক্ততা নির্ধারণের জন্য পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদিত নীতিমালা থাকতে হবে।

পাশাপাশি এসব পদে নিয়োগের জন্য প্রাপ্ত আবেদন মূল্যায়নের লক্ষ্যে পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদিত মূল্যায়নপ্রক্রিয়া থাকতে হবে। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি একই সঙ্গে উল্লেখিত একাধিক পদে বহাল থাকতে পারবেন না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, উল্লেখিত পদগুলোর দায়িত্ব ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন বিভাগের প্রধান, ঋণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবং কোম্পানি সচিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করতে হবে।

একই সঙ্গে নিয়োগ দেওয়ার ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগে এসব জীবনবৃত্তান্ত পাঠাতে হবে। এ ছাড়া পদগুলোর কোনো কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দিতে চাইলে অব্যাহতি দেওয়ার সর্বনিম্ন এক মাস আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, নিয়োগ পাওয়া সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যতা যাচাই করে নথিতে সংরক্ষণ করতে হবে। সবার হালনাগাদ ব্যক্তিগত যোগাযোগের ঠিকানা ও মুঠোফোন নম্বর প্রতিষ্ঠানের নথিতে সংরক্ষণ করতে হবে। যেসব কর্মকর্তা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র এ নীতিমালা জারি হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে যাচাইপূর্বক সবার ব্যক্তিগত নথি হালনাগাদ করতে হবে।