কৃষি ঋণ বিতরণে চুক্তিতে জনবল নিয়োগ করা যাবে

কৃষি ঋণ বিতরণে চুক্তিতে জনবল নিয়োগ করা যাবে

ফাইল ছবি

কৃষি ঋণ বিতরণে চুক্তিতে জনবল নিয়োগ করা যাবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কৃষি ঋণ বিতরণ কার্যক্রমে গতি আনতে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী জনবল নিয়োগ দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ‘কৃষি ঋণ বিতরণের জন্য ব্যাংকে চুক্তিভিত্তিক জনবল নিয়োগ’ শীর্ষক সার্কুলারটি সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের পাঠানো হয়েছে।

তাতে বলা হয়েছে, এমএফআই ও লিংকেজ এর মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণ কার্যক্রম ক্রমান্বয়ে কমিয়ে এনে ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ বাড়াতে হবে। সেজন্য ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণে অভিজ্ঞদের সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।

‘এগ্রি ক্রেডিট সুপারভাইজার’পদে (চুক্তিভিত্তিক) নিয়োগ দেওয়ার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির তালিকাভুক্ত/অনুমোদনপ্রাপ্ত এনিজিও/এমএফাই এ ন্যূনতম ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে প্রার্থীদের।

‘বয়স সীমা ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ বছরের মধ্যে থাকতে হবে’ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তরা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবেন না।

শিক্ষাগত যোগ্যতায় প্রার্থীকে ন্যূনতম স্নাতক হতে হবে। কোনো এনজিও বা এমএফআই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রার্থী কখনো বরখাস্ত হননি, তা নিয়োগকারী ব্যাংককে নিশ্চিত হতে হবে।

প্রতি বছর ব্যাংকগুলোকে কৃষি ঋণ বিতরণে একটি লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো ব্যাংক কোনো বছরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হলে অর্জিত না হওয়া অংশের অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ে নেয়।

পরবর্তী বছরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে ব্যাংকগুলো ওই অর্থ ফেরত পায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এই সময়ে থাকা অর্থের বিপরীতে কোনো প্রকার লভ্যাংশ পায় না বাণিজ্যিক ব্যাংক।

কৃষি ঋণ বিতরণে ব্যাংকারদের অনাগ্রহ ছিল সব সময়। সে কারণে কৃষি ঋণ কার্যক্রমে গতি আনতে তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠান, এনজিও বা ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ সংস্থার মাধ্যমেও বিতরণ করতে ব্যাংকগুলোকে সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিশেষ করে বিদেশি ও বিশেষায়িত ব্যাংকের এতে সুবিধা হয়। কারণ বেসরকারি খাতসহ বিদেশি এসব ব্যাংকের শাখা শহরমুখী হওয়ায় তাদের কৃষি ঋণ বিতরণ কিছুটা কঠিন হয়ে যায়।

এখন তৃতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণের প্রবণতা কমিয়ে এগ্রি ক্রেডিট সুপারভাইজার নিয়োগ দিতে বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর কারণ ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, “তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণ করলে সুদহার বেড়ে যায়। অথচ কৃষি ঋণ বিতরণের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বল্প সুদে সহজভাবে দ্রুত কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া।”

সেজন্য বাণিজ্যিক ঋণের চেয়ে এক শতাংশ কম সুদে কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়। বাণিজ্যিক ব্যাংকে যেখানে ৮ শতাংশ ‍সুদে কৃষি ঋণ পাওয়া যায়, সেখানে বাণিজ্যক ঋণে তা ৯ শতাংশ।

আর তৃতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণ করলে কৃষক পর্যায়ে ১৮ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদহার বর্তায় বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, “তৃতীয় প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমে না করে ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করলে কৃষকরা অপেক্ষাকৃত কম সুদে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন।”

এগ্রি ক্রেডিট সুপারভাইজার পদে নিয়োগ দিতে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যাংকের সরাসরি চুক্তি থাকতে হবে। পারিশ্রমিক ও ভাতা ব্যাংকের নিজস্ব সিদ্ধান্তে নির্ধারিত হবে। এ পদে নিয়োগের মেয়াদ, পুনঃনিয়োগ ও চুক্তির মেয়াদ ব্যাংকের নিজস্ব নীতিমালায় পরিচালিত হবে।

৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত মে মাস পর্যন্ত অর্থাৎ বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) ব্যাংকগুলো ২৯ হাজার ২৯৭ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করতে পেরেছে।

 

 

বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে নেমেছে পরবর্তী

বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে নেমেছে

কমেন্ট