‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ তহবিল এখন ৫০০ কোটি টাকা
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ নামে ১০০ কোটি টাকার যে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, চহিদা বাড়ায় সেই তহবিলের আকার বাড়িয়ে ৫০০ কোটি টাকা করো হয়েছে।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুসন বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ও দেশের সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনকে বিবেচনায় নিয়ে তাদেরকে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য গত বছরের ২ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক ১০০ কোটি টাকার একটি আবর্তনশীল পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে।
ওই সার্কুলারে বলা হয়, ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ নামে এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পাবেন গ্রাহকরা। এ তহবিল থেকে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল অ্যাপস, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ই-ওয়ালেট ইত্যাদি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে তফসিলি ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত তহবিলের মেয়াদ হবে ৩ বছর। প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৫০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেয়া হবে।
তখন বলা হয় ভবিষ্যতে চাহিদা বিবেচনায় এ পুনঃঅর্থায়নের পরিমাণ বাড়ানো হবে।
রোববার জারি করা নতুন সার্কুলারে তহবিলের আকার বাড়ানো বিষয়ে বলা হয়, “ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সম্প্রসারণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ত ও উৎসাহিত করার মাধ্যমে সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করতে তহবিলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ৫০০কোটি টাকায় উন্নীত করা হলো।”
তফসিলি ব্যাংকগুলো এ তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা শিডিউল অব চার্জেস সংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালায় বর্ণিত চার্জ বা ফি ছাড়া গ্রাহকের কাছ থেকে অন্য কোনো ধরনের চার্জ বা ফি আদায় করতে পারবে না ব্যাংক।
ব্যাংক এবং গ্রাহক উভয় পর্যায়ে ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৬ মাস। গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করা ঋণ আদায়ের সকল দায়-দায়িত্ব ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক বহন করবে।
অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো প্রতি তিন মাস পরপর বাংলাদেশ ব্যাংককে সুদসহ আসল প্রদান করবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদসহ পুনঃঅর্থায়িত অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চলতি হিসাব বিকলন করে তা আদায় করা হবে।
গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক আদায় করবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ আদায়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাওনাকে সম্পর্কিত করা যাবে না। ঋণ বিষয়ক যাবতীয় ঝুঁকি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বহন করবে। অর্থায়নকারী ব্যাংক এ তহবিলের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করবে।
ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে পুনঃঅর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্য, কাগজপত্র এবং দলিলাদির কপি সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে জমা দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে।
ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ, আদায় ও সদ্ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়াদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারক করা হবে।
শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া শর্তের ব্যত্যয় না করে স্বীয় অনুমোদিত বিনিয়োগ পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারবে।
কমেন্ট