রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সে ডলারের দর আরও বাড়ল
এখন থেকে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দর হবে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে হবে ১০৯ টাকা।
ডলারের দাম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ও রিজার্ভের প্রধান দুই উৎস রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সে ডলারের দর আরও বাড়ানো হয়েছে।
এখন থেকে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দর হবে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে হবে ১০৯ টাকা। অর্থাৎ রপ্তানি আয়ে ডলারের দর বেড়েছে ১ টাকা; রেমিটেন্সে বেড়েছে ৫০ পয়সা।
প্রায় দুই মাস ধরে রেমিটেন্সে প্রতি ডলারের জন্য ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা দিচ্ছিল ব্যাংকগুলো। আর রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে দিচ্ছিল ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা।
আমদানি নিষ্পত্তিতেও ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে।
ডলারের নতুন দামের এই সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার থেকে কার্যকর করা হবে। সোমবার ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) এক সভায় ডলারের দাম আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এতে সংকট আরও বেড়ে যায়।
পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর। এর পর থেকে এই দুই সংগঠন মিলে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে। মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত কার্যকর করছে এই দুই সংগঠন।
তবে, এবিবি ও বাফেদার এই সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রেই মানেনি ব্যাংকগুলো। অনেক ব্যাংক এই দুই সংগঠনের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়েও বেশি দামে রেমিটেন্স সংগ্রহ করেছে। এজন্য কয়েক দফায় কয়েকটি ব্যাংককে সতর্ক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন, আমদানির ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ডলারের দামে বেশি রাখছে ব্যাংকগুলো।
তবে,বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ডলার-সংকট যতটা প্রকট ছিল, তা অনেকটা কমে এসেছে। আমদানি ঋণপত্র খোলা কমে গেছে। তাতে ব্যাংকগুলোতে ডলারের মজুত কিছুটা বেড়েছে।
এর আগে গত মাসের বৈঠকে আন্তঃব্যাংক ডলারের দাম ১০৯ টাকার বেশি হওয়া যাবে না বলে একটি নতুন নিয়ম করা হয়েছিল। তার পর থেকে অবশ্য আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বাজারে ডলারের দর ১০৯ টাকার উপরে উঠেছি; ১০৯ টাকাতেই ‘স্থির’ রয়েছে ডলারের দর।
এদিকে জুলাই রিজার্ভ থেকে আর কম দামে ডলার বিক্রি করছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারের দরেই ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সব ক্ষেত্রে ডলারের এক দর নির্ধারণের লক্ষেই এ সব করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে এবিবির চেয়ারম্যান ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “রপ্তানি উৎসাহিত করতে ডলারের বিনিময় হার বাড়ানো হয়েছে। রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলারের ক্রয়মূল্যের ব্যবধান কমে এসেছে।'
'আমরা ধীরে ধীরে ডলারের অভিন্ন বিনিময় হারের দিকে যাচ্ছি।”
কমেন্ট