ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্য গৃহীত চার্জ ডকুমেন্ট ঋণগ্রহীতা এবং জামিনদাতাসহ সংশ্লিষ্ট তৃতীয় পক্ষকে পড়ে শোনাতে হবে। এরপর ডকুমেন্টে স্বাক্ষরের পাশাপাশি উভয় পক্ষের বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ নিতে হবে। প্রতীকী ছবি

ব্যাংক কোনো গ্রাহককে ঋণ বিতরণের আগে বিভিন্ন চার্জ সংক্রান্ত দলিলে ঋণগ্রহীতা এবং জামিনদাতার স্বাক্ষর নিয়ে থাকে। এখন থেকে স্বাক্ষরের পাশাপাশি বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ নিতে হবে এবং তা জাতীয় পরিচয় পত্রের সঙ্গে যাচাই করে নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে এ নির্দেশনা দিয়ে এক সার্কুলার জারি করেছে। 

এতে বলা হয়, ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্য গৃহীত চার্জ ডকুমেন্ট ঋণগ্রহীতা এবং জামিনদাতাসহ সংশ্লিষ্ট তৃতীয় পক্ষকে পড়ে শোনাতে হবে। এরপর ডকুমেন্টে স্বাক্ষরের পাশাপাশি উভয় পক্ষের বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ নিতে হবে। 

সম্প্রতি আদালতের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কোনো কোনো ঋণ গ্রহীতা ও জামিনদারের স্বাক্ষর নেই। এতে ঋণ আদায়ের আইনগত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এমন নির্দেশনা দিয়েছে। 

‘ঋণ সংশ্লিষ্ট চার্জ ডকুমেন্টে বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ গ্রহণ’ শীর্ষক সার্কুলারে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৮ মার্চ জারি করা এক সার্কুলারে ঋণ বিতরণের পূর্বে ঋণ সংশ্লিষ্ট চার্জ ডকুমেন্টসমূহ সম্পাদন করাসহ প্রাথমিক ও সহজামানতের উপর চার্জ ক্রিয়েশনের বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। তাছাড়া ঋণ গ্রহীতা ভিত্তিক, ঋণের ধরণ ভিত্তিক এবং ঋণের জামানত ভিত্তিক গৃহীতব্য চার্জ ডকুমেন্টসমূহ তালিকা আকারে উল্লেখ করা হয়েছে; যেখানে ঋণ গ্রহীতা এবং তৃতীয় ব্যক্তি/পক্ষের স্বাক্ষর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) গ্রহণ করা হয়ে থাকে। 

মহামান্য হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ মোতাবেক, সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে বেশ কিছু রিট পিটিশন দায়ের করা হচ্ছে যেখানে ঋণ গ্রহীতাগণ এবং ঋণের জামিনদাতাগণ উভয়ে যথাক্রমে ঋণ গ্রহণ এবং জামিন প্রদান সংক্রান্ত দলিলাদিতে স্বাক্ষর প্রদান করেননি মর্মে উল্লেখ করেছেন। 

ফলে সংশ্লিষ্ট চার্জ ডকুমেন্টসমূহের সঠিকতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতা এবং জামিনদাতার স্বাক্ষরের উপর নির্ভর করতে হয় বিধায় ঋণ আদায়ের আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ বিঘ্নিত হচ্ছে। 

“এই প্রেক্ষাপটে ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে উদ্ভূত আইনগত জটিলতা নিরসনকল্পে এ মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে যে, ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্যে গৃহীত/গৃহীতব্য চার্জ ডকুমেন্টস এর বিষয়বস্তু ঋণ গ্রহীতা এবং জামিনদাতাসহ সংশ্লিষ্ট ৩য় ব্যক্তি/পক্ষকে পড়ে শুনানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে এবং উক্ত ডকুমেন্টসমূহে স্বাক্ষরের (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পাশাপাশি তাদের উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ জাতীয় পরিচয়পত্রের (এআইডি) জন্য সংরক্ষিত ডাটাবেইজ হতে যাচাইপূর্বক তা গ্রহণ করতে হবে।” 

ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।