পদত্যাগ করা দুই এমডির সঙ্গে গভর্নরের বৈঠক
ব্যাংক এশিয়া থেকে আরিফ বিল্লাহ আদিল চৌধুরীর এমডি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার ডাকা হয়েছে ব্যাংক এশিয়ার চেয়ারম্যান রোমো রউফ চৌধুরীকে।
পদত্যাগ করা ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে সোমবার সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) হাবিবুর রহমান ও পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজ খানের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এ সময় ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কক্ষে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে ব্যাংক এশিয়া থেকে আরিফ বিল্লাহ আদিল চৌধুরীর এমডি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার ডাকা হয়েছে ব্যাংক এশিয়ার চেয়ারম্যান রোমো রউফ চৌধুরীকে।
এর আগে ব্যাংকটির পদত্যাগ করা এমডি আরিফ বিল্লাহ আদিল চৌধুরীর সাথে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বর্তমান আর্থিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক চাইছে না, নতুন করে কোনো ব্যাংকে সংকট তৈরি হোক। এ ছাড়া ব্যাংকের এমডিরা যাতে পেশাদারত্বের সঙ্গে ব্যাংক পরিচালনা করতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই চেষ্টার অংশ হিসেবে এর আগে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করা এমডি মেহমুদ হোসেনকে কাজে ফিরিয়ে এনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত সপ্তাহে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ান পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজ খান। এর আগে গত ২৬ জুলাই পদত্যাগ করেন ব্যাংক এশিয়ার এমডি আরিফ বিল্লাহ আদিল চৌধুরী। তারা আর অফিস করছেন না।
গত বৃহস্পতিবার এসবিএসি ব্যাংকের এমডি হাবিবুর রহমানও পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে তিনি রোববার থেকে আবার অফিসে যাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে পদত্যাগের কারণ জানতে পদ্মা ও এসবিএসি ব্যাংকের এমডিকে ডেকে পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
সূত্র জানায়, পদ্মা ব্যাংকের এমডি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বলেছেন, স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে ব্যাংককে সময় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাংকের কোনো পরিচালক বা চেয়ারম্যানের চাপে তিনি পদত্যাগ করেননি।
গভর্নর তখন তাকে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকৃত তথ্য দেওয়ার পরামর্শ দেন। না হলে ব্যাংক খাত নিয়ে আমানতকারীদের ভেতর ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হতে পারে বলে জানানো হয়।
এদিকে এসবিএসি ব্যাংকের এমডি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তিনি আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ পত্র জমা দেননি এবং নিয়মিত অফিস করছেন। এ সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তার পদত্যাগসংক্রান্ত সংবাদ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ব্যাংক এশিয়ার এমডি আরিফ বিল্লাহ আদিল চৌধুরী কেন পদত্যাগ করেছেন, তা জানতে ব্যাংকের চেয়ারম্যান রোমো রউফ চৌধুরীকেও ডেকেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তিনি দেশে ফিরে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানা গেছে।
পরিচালকদের চাপে ব্যাংক এমডিদের পদত্যাগ ঠেকাতে ২০১৪ সালে একটি সুরক্ষা নীতিমালা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এই নীতিমালা দৃশ্যত খুব একটা কাজে আসেনি। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মালিকানায় আসার সময় তৎকালীন এমডিদের বাদ দেয় এস আলম গ্রুপ।
তখন নতুন এমডি হিসেবে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাদের ব্যাপারে তড়িঘড়ি করে অনুমোদনও দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এআরএইচ ডটকমকে বলেন, “আগে পরিস্থিতির বিবেচনায় অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এখন আমরা চাই না নির্দোষ কোনো এমডি পদ ছেড়ে চলে যাক। কারণ, এই মুহূর্তে ব্যাংক খাত নিয়ে এমনিতেই নানা ধরনের আস্থাহীনতা কাজ করছে।”
এদিকে এসবিএসি ব্যাংকের এমডির পদত্যাগসম্পর্কিত খবরের প্রতিবাদে ব্যাংকটি বলেছে, এমডি হাবিবুর রহমানের পদত্যাগসংক্রান্ত তথ্য ঠিক নয়। তিনি নিয়মিত অফিস করছেন।
কমেন্ট