রুপিতে প্রথম লেনদেন নিষ্পত্তি করল ইবিএল
লেনদেনের পরিমাণ ২৪ লাখ রুপি। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তির প্রথম ঘটনা।
ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রাণ–আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো লিমিটেডের একটি বাণিজ্যিক লেনদেন রুপিতে নিষ্পত্তি করেছে।
এই লেনদেনের পরিমাণ ২৪ লাখ রুপি। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তির প্রথম ঘটনা।
এ উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানে ইবিএলের প্রধান কার্যালয়ে বুধবার এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের (আইবিসিসি) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন চৌধুরী, ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আলী রেজা ইফতেখার।
ইবিএলের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “ভারত বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। মার্কিন ডলারকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পন্ন করল। আমি মনে করি, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ যাত্রার শুরু।”
ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার বলেন, গত ১১ জুলাই বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ায় ভারতীয় রুপি ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর লক্ষ্য হলো দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমিয়ে আনা, লেনদেনের ব্যয় হ্রাস এবং একটি সাবলীল ও কার্যকর বাণিজ্যপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, লেনদেন নিষ্পত্তিতে নতুন এই ব্যবস্থা বাণিজ্যের ব্যয় কিছুটা কমবে। তাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের (আইবিসিসি) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ২০০ কোটি ডলারের পণ্য ভারতে রপ্তানি করে। আর ভারত থেকে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে।
নতুন এ ব্যবস্থায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তিনি বাণিজ্য লেনদেন নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশি মুদ্রাকেও বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানান।
আরও ২ ব্যাংককে রুপিতে লেনদেনের অনুমতি
চলতি বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ-ভারত রুপিতে বাণিজ্য চালু হওয়ার পর থেকে আরও অনেক বাংলাদেশি ব্যাংক ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য পরিচালনার অনুমতি পেতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
ডলারের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে দুই দেশের মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য পরিচালনার এই উদ্যোগ নেয় উভয় দেশের সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও দুটি ব্যাংক- ইসলামী ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। এ নিয়ে এই ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারী মোট ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪টিতে।
গত ১১ জুলাই ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য চালু হওয়ার সময় সোনালী ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডকে (ইবিএল) বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য ডলারের পরিবর্তে রুপিতে এলসি খোলার অনুমোতি দেওয়া হয়।
এছাড়া আরও ৬ ব্যাংক- ট্রাস্ট ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এবি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক রুপিতে বাণিজ্য পরিচালনার অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন চৌধুরী এআরএইচ ডটকমকে বলেন, "এই ব্যাংকগুলোর আবেদন বর্তমানে পর্যালোচনাধীন রয়েছে।"
কমেন্ট