‘নগদ’ ও ‘কড়ি’ পেল ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন

‘নগদ’ ও ‘কড়ি’ পেল ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন

আর বিকাশ ও ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃত্বাধীন বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক, ১০ ব্যাংকের নেতৃত্বে ডিজিটেন এবং ব্যাংক এশিয়ার নেতৃত্বাধীন ডিজিটাল ব্যাংককে আলাদা লাইসেন্স দেওয়া হবে না। এসব আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে ডিজিটাল ব্যাংকিং উইং খোলার অনুমোদন দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দেশে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ব্যাংক গঠনের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার দুই ডিজিটাল ব্যাংকের সম্মতিপত্র (এলওআই) দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদের নেতৃত্বাধীন ‘নগদ ডিজিটাল’ এবং দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী স্কয়ার ও এসিআই গ্রুপের নেতৃত্বাধীন ‘কড়ি ডিজিটাল’ নামে দুই ব্যাংকের এলওআই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক জানয়েছেন।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্য পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

বহুল আলোচিত ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় মোট ৫২টি আবেদন পেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই–বাছাই শেষে নয়টি প্রতিষ্ঠানের সব কাগজপত্র ঠিক ছিল। তবে এখান থেকে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের নেতৃত্বাধীন ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আর বিকাশ ও ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃত্বাধীন বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক, ১০ ব্যাংকের নেতৃত্বে ডিজিটেন এবং ব্যাংক এশিয়ার নেতৃত্বাধীন ডিজিটাল ব্যাংককে আলাদা লাইসেন্স দেওয়া হবে না।

এসব আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে ডিজিটাল ব্যাংকিং উইং খোলার অনুমোদন দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

‘নগদ’ ও ‘কড়ি’ ডিজিটাল ব্যাংককে এলওআই পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করতে বলা হয়েছে। এরপর এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ছয় মাসের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে সন্তোষজনক হলে তখন বাকি তিন প্রতিষ্ঠান এলওআই পাবে।

এরা হলো—স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, নর্থেস্ট ডিজিটাল ব্যাংক এবং জাপান–বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক।

পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক শেষে মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য ৫২টি আবেদন এসেছিল। এসব আবেদন মূল্যায়নে তিনটি কমিটি করা হয়। প্রাথমিক বাছাই, ব্যবসা ও কারিগরি এবং চূড়ান্ত মূল্যায়ন কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই–বাছাই করে নয়টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করে।

“প্রযুক্তি, ব্যবসা, নিরাপত্তা এসব দেখে মোট ১০০ মার্কিংয়ের ভিত্তিতে স্কোরিং করা হয়। যেসব প্রতিষ্ঠান ৬০ বা তদুর্দ্ধ নম্বর পেয়েছে তাদের তালিকা পর্ষদে উপস্থাপন করা হয়।”

তিনি বলেন, পরিচালনা পর্ষদ প্রাথমিকভাবে দুটি প্রতিষ্ঠানের এলওআই দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রস্তুত করা তালিকার নয়টির মধ্যে একটি ছিল বিমা কোম্পানি লেড। সেটিকে পর্ষদ বিবেচনায় নেয়নি।

“বাকি আটটির মধ্যে তিনটির সঙ্গে ব্যাংকের সম্পৃক্ততা থাকায় তাদের আলাদা করে লাইসেন্স না দিয়ে ডিজিটাল ব্যাংকিং উইং খোলার অনুমোদন দেওয়া হবে।”

এ ছাড়া এলওআই দেওয়া দুটি প্রতিষ্ঠানের সফলতার ভিত্তিতে বাকি তিনটির লাইসেন্স দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

সাধারণভাবে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ৫০০ কোটি টাকার উদ্যোক্তা মূলধন দরকার হয়। তবে ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য দিতে হচ্ছে ১২৫ কোটি টাকা।

ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য প্রথমে চলতি বছরের ২১ জুন থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সময় দেওয়া হয়। পরে সময় বাড়িয়ে ১৭ আগস্ট করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক চালুর অনুমতি পাওয়া নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের সঙ্গে বর্তমান উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি রয়েছে সামিট ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান ফরিদ খানসহ অন্যরা।

আর ‘কড়ি’ ডিজিটাল ব্যাংকের মূল উদ্যোক্তা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম। তিনি সাবেক অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের স্বামী।

বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের একেবারে শুরুর দিকের উদ্যোক্তা হাবিবুল্লাহ এন করিম। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) দুই বার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচনের আগেই বহুল কাঙ্ক্ষিত ডিজিটাল ব্যাংক চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। দেশে এর আগে প্রচলিত ধারার ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পেত। এবার ব্যবসায়ী ও আমলাদের প্রাধান্য দেখা গেল মনে করছেন খাত-সংশ্লিষ্টরা।

খেলাপি ঋণ কমাতে ৭ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কঠোর বার্তা পরবর্তী

খেলাপি ঋণ কমাতে ৭ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কঠোর বার্তা

কমেন্ট