‘নয়-ছয় সুদহার বেঁধে না দিলে ব্যাংকিং খাত খুঁজে পাওয়া যেত না’

‘নয়-ছয় সুদহার বেঁধে না দিলে ব্যাংকিং খাত খুঁজে পাওয়া যেত না’

সচিবালয়ে রোববার সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদে ‘নয়-ছয়’ সুদহার বেঁধে না দিলে ব্যাংকগুলোকে খুঁজে পাওয়া যেত না বলে  মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেছেন, “ব্যাংক ঋণে সুদহার বেঁধে দেওয়া নিয়ে সমালোচনা হলেও আমানত ও ঋণে সুদহার ৬ ও ৯ শতাংশ করা না হলে এতদিন ব্যাংক খাত খুঁজে পাওয়া যেত না। একই সঙ্গে খাবার-দাবারও পাওয়া যেত না।”

সচিবালয়ে রোববার সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বেশ কয়েক বছরের চেষ্টার পর ২০২০ সালে ব্যাংকে আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ শতাংশ এবং ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ কার্যকর করা হয়।

তিন বছর আগের সেই কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “আপনারা ভালো করে নিজেরা নিজের বিবেককে প্রশ্ন করেন যদি ৯/৬ না থাকত, তাহলে আজকে আমাদের ব্যাংকিং খাত খুঁজে পেতেন না। দেশের মানুষকে, মানুষের খাবার-দাবারের কিছু ব্যবস্থা থাকত না।”

এখন অবশ্য এই সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের পরামর্শে সুদহারের ‘করিডোর’চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, এজন্য বাজারভিত্তিক ‘রেফারেন্স রেট’ চালু করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, সুদহারের ৬/৯ এর সীমা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বোঝাতে সক্ষম হওয়ায় এটা পরিবর্তন করা হয়েছে।

বিষয়টি তুলে ধরে একজন সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “অর্থনীতির প্রত্যেকটা কম্পোনেন্ট ফেক্সিবল, এটা ফিক্সড কিছুই না। কোনো দেশ পাঁচ বছরের অর্থনীতির প্ল্যান একবারে করে না। দুই বছরের একবারে করে না, বছরভিত্তিক করে।

“গভর্নর মহোদয় যদি মনে করেন যে এটা ঠিক হয় নাই, এটা ভালো, এটা উনার ব্যাপার। ব্যক্তি হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তির চিন্তা আছে, চিন্তাভাবনা আছে, সেই ভাবনা মোতাবেক তিনি এগুবেন। হয়ত উনি ভাবছেন যে, এটা যদি করা হতো হয়ত বা ভালো হত। কিন্তু কোনটা ভালো হত কেউ বলতে পারবে না।”

অন্য দেশের তুলনায় ভালো আছি

রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য কী পদক্ষেপ নেবেন, এ প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, “২০০৬ সালে রিজার্ভ ছিল ৬ বিলিয়ন ডলার। এটাকে এক সময় ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন আছে ১৯ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার।”

আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়া যাবে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।”

জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “আগে ভারত থেকে অনেক খাদ্যদ্রব্য আসত। এখন আসে না। আগে তারা দিতে পারত, এখন পারে না। এটা কিছুদিন সহ্য করতে হবে। মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছি।”

অনেক লম্বা সময়ের জন্য খাবারের নিজস্ব ব্যবস্থা আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অন্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো অবস্থানে আছি। বুদ্ধিমতার সঙ্গে রাজস্ব, সরকারি কাজ এবং দেশের অর্থনীতি চালাতে হবে। এই কাজটি সরকার করে যাচ্ছে।

“খাবার নিয়ে এক সময় অনেক টানাপড়েন ছিল, এখন আর সেই অবস্থা নেই, প্রচুর খাদ্য আছে। এর কারণটা হল, দেশের বিজ্ঞানী যারা আছেন, কৃষির ওপরে কাজ করেন… তাদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা। আগে আমরা যে আকার নিয়ে অর্থনীতির বিস্তার ঘটাচ্ছিলাম সেখান অনেক দুর বেরিয়ে আসছি। এখন খাদ্যশস্য উৎপাদন ৫ গুণ বেড়েছে।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “বৈশ্বিক কারণেই দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণে সরকার চেষ্টা করেছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির ধকল আরও কিছুদিন সহ্য করতে হবে।”

মুদ্রানীতি কমিটিতে ঢাবি অর্থনীতি বিভাগের প্রধান, বিআইডিএসের ডিজি পূর্ববর্তী

মুদ্রানীতি কমিটিতে ঢাবি অর্থনীতি বিভাগের প্রধান, বিআইডিএসের ডিজি

‘নগদ’ ও ‘কড়ি’ পেল ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন পরবর্তী

‘নগদ’ ও ‘কড়ি’ পেল ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন

কমেন্ট