ব্যাংকগুলোর অবহেলায় অর্থঋণ আদালতে ঝুলছে ৭২ হাজার মামলা: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
রাজধানীর ব্যস্ততম মতিঝিলের ব্যাংক পাড়া। ফাইল ছবি
অর্থঋণ আদালতে চলমান সাড়ে ৭২ হাজার মামলা যথাসময়ে নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংকগুলোকে কড়া নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মামলাগুলোর কারণে পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার বেশি আটকে আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ব্যাংকগুলোর অবহেলার কারণেই বছরের পর বছর ধরে ঝুলছে অর্থঋণ আদালতের এই মামলাগুলো। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যাংক। তাই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে মামলা পরিচালনার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক সার্কুলারে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে—
>> অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর মাধ্যমে অর্থঋণ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পৃথক আদালত গঠিত হয়েছে এবং সময়াবদ্ধ কার্যপদ্ধতি অনুযায়ী মামলাসমূহ নিষ্পত্তির আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
>> সম্প্রতি বিভিন্ন অর্থঋণ মামলার রায় ও আদেশ পর্যালোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, অর্থঋণ মামলাসমূহ নিষ্পত্তিতে প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে, যার ফলে আমানতকারী ও তফসিলি ব্যাংক উভয়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতার পেছনে মামলায় সকল পক্ষ বিশেষ করে বাদী ব্যাংকের সুদক্ষভাবে মামলা পরিচালনায় অনেক অবহেলা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা অনাকাঙ্খিত।
এবং
>> এ প্রেক্ষিতে, অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলাসমূহ যথাসময়ে সুদক্ষভাবে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মামলাসমূহের ধার্য তারিখে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর সাথে যোগাযোগক্রমে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সহকারে মামলা পরিচালনার জন্য আপনাদেরকে পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুন শেষে অর্থঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪০টি বিচারাধীন মামলার বিপরীতে আটকে আছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। ছয় মাস আগে ডিসেম্বর শেষে অর্থঋণ আদালতে ৭২ হাজার ১৮৯টি বিচারাধীন মামলার বিপরীতে আটকে ছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা।
অর্থাৎ ছয় মাসের ব্যবধানে বিচারাধীন মামলা বেড়েছে ৩৭১টি। এর বিপরীতে নতুন করে ১১ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা আটকে আছে। এক বছর আগে (জুন-২০২২) অর্থঋণ আদালতে ৬৯ হাজার ৩৬৯টি মামলার বিপরীতে আটকা ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা।
কমেন্ট