এবার এনআরবি ব্যাংক এমডির পদত্যাগ
মামুন মাহমুদ শাহ
এবার প্রবাসী ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে গঠিত এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মামুন মাহমুদ শাহ পদত্যাগ করেছেন। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ আগেই তিনি পদত্যাগ করেন।
এর আগে গত বছর চার ব্যাংকের এমডি পদত্যাগ করেছিলেন। তাদের মধ্যে উদ্যোগী হয়ে তিনজন এমডিকে নিজ পদে ফিরিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এনআরবি ব্যাংকের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, কয়েকজন পরিচালকের চাপে ব্যাংকটিতে গত কয়েক মাসে বেশ কিছু ঋণ অনুমোদন হয়, যা নিয়মিতভাবে আদায় হচ্ছে না। সম্প্রতি আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়, যার বেশির ভাগই বেনামি ঋণ। এই বেনামি ঋণের জের ধরেই এমডি পদ ছেড়ে দেন।
ব্যাংকটির এমডি মামুন মাহমুদ শাহ তা স্বীকার না করলেও এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, “ব্যাংকটিতে কাজের পরিবেশ না থাকায় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেছি।”
গত ২১ জানুয়ারি ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে মামুন মাহমুদ শাহ জানিয়েছেন, কিছু ব্যক্তিগত কারণে চাকরি অব্যাহত রাখতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ব্যাংকে কাজ করে স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। ভালোও লাগছে না। তাই আমি গত ২১ জানুয়ারি পদত্যাগ করেছি। পর্ষদ তা গ্রহণ করেছে।”
এনআরবি ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমিডি) শাকির আমিন চৌধুরী বর্তমানে ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এনআরবি ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে নিয়োগ পান ব্যাংকার মামুন মাহমুদ শাহ।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালে প্রবাসীদের উদ্যোগে গঠিত যে তিনটি ব্যাংককে দেশে ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে অনুমোদন দেয়, তার মধ্যে একটি এনআরবি ব্যাংক। তিন ব্যাংকের মধ্যে এনআরবি ব্যাংকটিই প্রকৃত প্রবাসী ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে গঠিত হয়। অন্য দুটির সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও যুক্ত ছিলেন।
এনআরবি ব্যাংক প্রবাসী ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে গঠিত হলেও এখন পরিচালকদের অনেকে দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আবার ব্যাংকটির মূল উদ্যোক্তাদের অনেকে ব্যাংক থেকে দূরে সরে গেছেন। ফলে একটি পক্ষের হাতে পুরো ব্যাংকটি জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে গত তিন বছরে ব্যাংকটির বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতি হয়।
এর মধ্যে এমডি পদত্যাগ করলেন।
যোগাযোগ করা হলে এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান বলেন, “এমডি সাহেব পায়ে ব্যথা পেয়ে অসুস্থ হয়েছেন। এ জন্য মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ আগে ব্যাংক ছেড়ে দিয়েছেন। উনি ভালো মানুষ। ব্যাংকের অনেক উন্নতি করেছেন। প্রয়োজনে আমরা আবারও তাকে এমডি করতে পারি।”
কমেন্ট