রপ্তানি আয় দেশে ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও একটি উদ্যোগ

রপ্তানি আয় দেশে ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও একটি উদ্যোগ

বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এর ফলে যে কেউ পুরোনো আয় দেশে আনলেও এখনকার ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা দামে রপ্তানি আয় পাবেন।

রপ্তানি আয় দেশে ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। এখন থেকে যেদিন রপ্তানি আয় নগদায়ন করা হবে—সেদিনের ডলারের বিনিময় দর অনুসারে টাকা পাবেন রপ্তানিকারকরা। ফলে তারা দেরীতে নগদায়ন করলেও ডলারের বাড়তি দর পাওয়ার সুযোগ পাবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এর ফলে যে কেউ পুরোনো আয় দেশে আনলেও এখনকার ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা দামে রপ্তানি আয় পাবেন।

রপ্তানিকারকদের কেউ কেউ রপ্তানি করা পণ্যের আয় সময়মতো দেশে আনছেন না। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হয়েছিল, রপ্তানি আয় যখনই দেশে আসুক না কেন, যে সময়ে আয় দেশে আসার সময় ছিল, সে সময়ের ডলারের দাম অনুযায়ী মূল্য পাবেন রপ্তানিকারক।

এখন আবার সেই সিদ্ধান্ত বদলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, যখন রপ্তানি আয় আসবে, তখনকার ডলারের দামেই মূল্য পাবেন রপ্তানিকারক।

দুই বছর ধরে চলা ডলারের সংকটের মধ্যে রপ্তানি আয় সময়মতো দেশে আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে রপ্তানি আয় সময়মতো দেশে আসছে না। সময়মতো আয় দেশে না আনলে অর্থ পাচারের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও এমন উদ্যোগ দেখা যায় না।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, "রপ্তানি শিপমেন্ট হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে রপ্তানি আয় দেশে নিয়ে আসার বাধ্যবাধকতা অনেক আগে থেকেই আছে। তবে এসব আয়ের একটা অংশ সময়মতো দেশে আসে না। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রপ্তানি আয় যে দিনই এক্সপোর্টাররা নগদায়ন করবেন, তারা ওই দিনের ডলারের রেট পাবেন।”

“ফলে আগে তারা ডলারের দর নিয়ে যে দ্বিধায় পড়তেন, সেটি দূর হলো।"

এর আগে, গত বছরের মার্চ মাসে এক সার্কুলার জারির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল, রপ্তানি চালান হওয়ার ১২০তম দিনে ডলারের যে দর থাকবে, আয় পরে আসলেও রপ্তানিকারক সে দরই পাবে। ডলারের বিনিময় দর বেড়ে গেলে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তবে ডলারের দর কমে গেলে যেদিন আয় আসবে, সেদিনের দরই পাবেন রপ্তানিকারক।

তখন অনেক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল যে, ডলারের দর বেশি পেতে রপ্তানিকারকরা আয় দেরীতে দেশে আনছে। সে প্রেক্ষিতেই রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসনের সময়সীমা নিয়ে কিছুটা কঠোর অবস্থানে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গত ৯ মে থেকে ডলারের দর নির্ধারণের নতুন পদ্ধতি ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্য দিয়ে একদিনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার বড় অবমূল্যায়ন হয়; ডলারের দাম বাড়ে ৭ টাকা। অর্থাৎ একদিনেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

ক্রলিং পেগ বিনিময় হার চালুর মাধ্যমে ডলারের দাম ১১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থাৎ ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। এরসঙ্গে ১ টাকা যোগ ও ১ টাকা বিয়োগ করতে পারবে ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ ডলারের সর্বোচ্চ দর হবে ১১৮ টাকা।

সে হিসাবে, রপ্তানি আয় এখন নগদায়ন করলে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা দর পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।

সঞ্চয়পত্র: ৭ মাস ধরে কেনার চেয়ে ভাঙানো বেশি পরবর্তী

সঞ্চয়পত্র: ৭ মাস ধরে কেনার চেয়ে ভাঙানো বেশি

কমেন্ট