ডিজিটাল ব্যাংকের চূড়ান্ত লাইসেন্স পাচ্ছে নগদ
এছাড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া অন্য প্রতিষ্ঠান কড়ি ডিজিটাল ব্যাংককে সব কাজ গুছিয়ে আনতে না পারায় আরও ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করতে চূড়ান্ত লাইসেন্স পাচ্ছে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেড। নীতিগত অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রতিষ্ঠান কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেড সব কাজ গুছিয়ে আনতে না পারায় আরও ছয় মাস সময় নিয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদ ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেডকে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।
এআরএইচ ডট নিউজকে তিনি বলেন, “প্রস্তাবিত নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের বিস্তারিত বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হয়। যা চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। তাই এটা বলা যেতে পারে যে, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।”
এছাড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া অন্য প্রতিষ্ঠান কড়ি ডিজিটাল ব্যাংককে সব কাজ গুছিয়ে আনতে না পারায় আরও ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান মেজবাউল হক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্য পরিচালক এবং ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ডিজিটাল ব্যাংক ছাড়াও সভায় দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, খেলাপি ঋণ কমানোর উপায়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করতে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেডকে আগ্রহপত্রের কপি হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ওই দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার তার কার্যালয়ে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুকের হাতে ডিজিটাল ব্যাংকের আগ্রহপত্র বা লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) হস্তান্তর করেন। চিঠি পেয়ে স্বল্পতম সময়ে বহুল আলোচিত ডিজিটাল ব্যাংকের কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
পরের দিন ২৬ অক্টোবর ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করতে কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেডকে আগ্রহপত্রের কপি হস্তান্তর করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তার আগে ২২ অক্টোবর দেশে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ব্যাংক গঠনের প্রাথমিক অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় দুইটি প্রতিষ্ঠানকে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক গঠনের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো হলো নগদ ডিজিটাল ব্যাংক ও কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক।
পাশাপাশি ১০ ব্যাংকের উদ্যোগে গঠিত ডিজিটেন ডিজিটাল ব্যাংক, বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার ডিজিটাল ব্যাংককে ডিজিটাল উইং চালুর অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
এ ছাড়া নগদ ও কড়ি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চালুর ছয় মাস পর সেবা পর্যালোচনা করে আরও তিন ব্যাংককে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলো হলো স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, নর্থ ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংক ও জাপান-বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক।
পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক চালুর অনুমতি পাওয়া নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের সঙ্গে বর্তমান উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি রয়েছেন সামিট ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান ফরিদ খানসহ অন্যরা। আর কড়ি ডিজিটাল ব্যাংকের মূল উদ্যোক্তা হাবিবুল্লাহ এন করিম।
ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় মোট ৫২টি আবেদন পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। যাচাই-বাছাই শেষে ৯টি প্রস্তাব পাঠানো হয় পর্ষদে। এসব প্রতিষ্ঠান শর্ত মেনে সব কাগজপত্র জমা দিয়েছিল।
তবে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’ এবং ‘কড়ি ডিজিটাল পিএলসি’কে সম্মতিপত্র ইস্যুর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। ৬ মাসের মধ্যে মূলধন জোগানসহ সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করে আসতে বলা হয় চূড়ান্ত লাইসেন্সের জন্য। তবে কড়ি আরও ছয় মাস সময় নিয়েছে।
স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকের কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দিয়ে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, “আমরা খুবই আনন্দিত যে, দেশে প্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক চালু করতে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষ যারা নানা কারণে ব্যাংকে আসতে বাধা অনুভব করেন, তাদের কাছেই সেবা নিয়ে হাজির হবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক। এ পদ্ধতিতে গ্রাহককে আর ব্যাংকে আসতে হবে না, বরং ব্যাংকই মানুষের হাতে হাতে ঘুরবে।”
“আমরা চাই প্রথাগত ব্যবসায়ীদের বাইরে যারা আছেন, তাদের প্রদান করব। পাশাপাশি ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিম চালুসহ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কাজের সবকিছুর সমাধান দেবে ডিজিটাল ব্যাংক। এর মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের পথ আরও সুগম হবে।”
কমেন্ট