নতুন অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি আসছে ১৮ জুলাই
সরকারের রাজস্ব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বছরে দুইবার মুদ্রানীতির ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মুদ্রা ও ঋণ সরবরাহ বাড়ানো বা কমানোর নীতি বা বিভিন্ন নির্দেশনার কথা তুলে ধরা হয়।
১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতি প্রকাশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ১৮ জুলাই নতুন মুদ্রানীতি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম।
এর আগে গত বুধবার মুদ্রানীতি নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, আগের মুদ্রানীতিগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারের মুদ্রানীতিও সংকুলানমুখী ভঙ্গি নিয়ে এগোবে।
এ ছাড়া মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার আরও বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে জানিয়ে ওই বৈঠকে গভর্নর বলেছিলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাজস্ব নীতির সঙ্গে সমন্বয় করে মুদ্রানীতিও সংকোচনমূলক রাখা হবে।
এদিকে অন্যান্যবার মুদ্রানীতির ঘোষণা দেওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও এবার সে ধরনের কোনও আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংবাদ কর্মীদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপের কারণে ইতোমধ্যে সংস্থাটির একটি সংবাদ সম্মেলন বর্জন করেন সংবাদকর্মীরা।
এবার মুদ্রানীতির অনুষ্ঠান বর্জনের আশঙ্কা থেকে সংবাদ সম্মেলনের বিকল্প হিসেবে মুদ্রানীতির বিবরণী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে তুলে ধরবে সংস্থাটি।
সরকারের রাজস্ব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বছরে দুইবার মুদ্রানীতির ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মুদ্রা ও ঋণ সরবরাহ বাড়ানো বা কমানোর নীতি বা বিভিন্ন নির্দেশনার কথা তুলে ধরা হয়, যা থেকে অর্থনীতির ভবিষ্যত ধারা সম্পর্কে ইঙ্গিত পায় বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা ও বিশ্লেষকরা।
গত ২৩ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতির কৌশল নির্ধারণে বিভিন্ন ধরনের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য বৈঠক করার কথা জানায়। এই মতামতের ভিত্তিতে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে মুদ্রানীতির কৌশল গ্রহণ ও এর ওপর ভিত্তি করে মুদ্রানীতি চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। ১৬ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় মুদ্রানীতির অনুমোদন দেওয়া হবে।
নতুন অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে রাখার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এই অর্থবছরে সরকার মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করেছে। গত ২৯ জুন এ সংক্রান্ত অর্থবিল জাতীয় সংসদে পাস হয়।
এর আগেও আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই মুদ্রানীতি ঘোষণা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফজলে কবির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর থাকাকালে পরপর দুই বছর মুদ্রানীতি ঘোষণার জন্য কোনও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়নি।
২০১৬ সালের ২০ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ৩ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন ফজলে কবির। ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কারণে মুদ্রানীতির বিবরণী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এবং প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। তাছাড়া আগে প্রতি ছয় মাসে একবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হলেও ওই দুই বছর ১২ মাসে একবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়।
কমেন্ট