একদিনেই ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার ব্যাংকগুলোর

একদিনেই ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার ব্যাংকগুলোর

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দিয়ে বলেছে, নগদ টাকার সরবরাহ ঠিক রাখতে বুধবার এই টাকা ধারা দেওয়া হয়েছে।

টানা পাঁচ দিন ছুটির পর কারফিউ শিথিলের সুযোগে খোলা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তারল্য সংকট কাটাতে এক দিনেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দিয়ে বলেছে, নগদ টাকার সরবরাহ ঠিক রাখতে বুধবার এই টাকা ধারা দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংক খাতের কর্মকর্তারা বলছেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকা ও এটিএম বুথে নগদ টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার ব্যাংক খোলার দিনই তারল্য সংকটে ছিল ব্যাংকগুলো।

ফলে বুধবার ব্যাংক খোলার প্রথম দিনেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো নিয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা, বাকি টাকা নিয়েছে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ধার নেওয়া এই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা হিসাবে ঘাটতি ও নগদ জমায় (সিআরআর) ঘাটতি হিসেবে ব্যবহার করে অনেক ব্যাংক। আবার অনেক ব্যাংক নগদ টাকা নিয়ে গ্রাহকের চাহিদা মেটায়। সাম্প্রতিক সময়ে নগদ টাকার চাহিদা বেশ বেড়ে গেছে। ব্যাংক শাখার পাশাপাশি এটিএমগুলোতেও নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে নজিরবিহীন সহিংসতার জেরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পাঁচ দিন এবং মোবাইল ইন্টারনেট ছয় দিন বন্ধ ছিল। এর মধ্যে শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির পর রোব থেকে মঙ্গলবার তিন দিন সাধারণ ছুটি ছিল।

সাধারণত ব্যাংকগুলো ধার নেওয়া এই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা হিসাবে ঘাটতি ও নগদ জমায় (সিআরআর) ঘাটতি হিসেবে ব্যবহার করে। আবার অনেক ব্যাংক নগদ টাকা নিয়ে গ্রাহকের চাহিদা মেটায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো, অ্যাসিউরড রেপো, অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) ও শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির (আইবিএলএফ) নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।

এই নিলামে ৭ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১৪টি ব্যাংক ও দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার ৭ কোটি টাকা, ১৪ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ৯টি ব্যাংককে ২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, ২৮ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১২টি ব্যাংক ও দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়।

১৮০ দিন মেয়াদি অ্যাসিউরড রেপো সুবিধার আওতায় তিনটি ব্যাংককে ৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা এবং ১ দিন মেয়াদি অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট আওতায় ১১টি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংককে ৩ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়। পাশাপাশি ১৪ দিন মেয়াদি ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় ১টি ব্যাংককে ৪৯৭ কোটি টাকা ও ২৮ দিন মেয়াদে ৫টি ইসলামি ধারার ব্যাংককে ৯৮৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়।

সব মিলিয়ে বুধবারে ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়।

৭ দিন মেয়াদে টাকা ধারের সুদহার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, ১৪ দিন মেয়াদে সুদহার ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ও ২৮ দিন মেয়াদি টাকা ধারের সুদহার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এ ছাড়া অ্যাসিউরড রেপো ও অ্যাসিউরড লিকুইডিটির সুদহার সাড়ে ৮ শতাংশ, ইসলামি ধারার ব্যাংকের জন্য মুনাফার হার সাড়ে ৫ শতাংশ, ২৮ দিন মেয়াদি ইসলামি ধারার ব্যাংকের জন্য মুনাফার হার ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ ধরা হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি কমাতে আবারও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি পরবর্তী

মূল্যস্ফীতি কমাতে আবারও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি

কমেন্ট