কারা অর্থ পাচার করেছে, জানা যাবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

কারা অর্থ পাচার করেছে, জানা যাবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর অফিস খোলার প্রথম দিন কার্যালয়ে আসেননি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সাংবাদিক প্রবেশে দীর্ঘদিন যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশ থেকে কারা কী পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন—সব তথ্য অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান তিনি।

সাইদুর রহমান বলেন, “গভর্নর মানসিক চাপের কারণে আজ (মঙ্গলবার) অফিস করছেন না; তিনি যার যার কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য বলেছেন।”

তিনি বলেন, ব্যাংক খাত পুনর্গঠনের কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে আগের মতোই আদানপ্রদান হবে। তাদের প্রবেশে বাধা থাকবে না। ছাত্র-জনতার এই বিজয়ে অন্যদের মতো তারাও আনন্দিত বলে জানান এই ডেপুটি গভর্নর।

সভায় ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ বলেন, “ব্যাংক খাতে লুটপাট চলেছে। তাতে এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে গেলেও কোনোরকম সঠিক ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত এ সময় সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া।”

এ প্রসঙ্গে ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, “দেশ থেকে অনেক টাকা পাচার হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হওয়ার পর তাদের বিষয়ে আপনারা আরও জানতে পারবেন।”

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে যে ‘বিধিনিষেধ’ ছিল তা তুলে দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

“দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করছেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশে নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। তাতে এক রকম ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। তাই আজ থেকে সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকে আগের মতই প্রবেশ করতে পারবেন।”

তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের রিপোর্টের মাধ্যমেই ব্যাংক খাতে ঘটে যাওয়া নানা রকম অপরাধ অন্যায়ের বিষয়ে জানতে পারতাম। এরপর আমরা সেগুলোর ওপর নানা ব্যবস্থা ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতাম।

“তবে আমার অনুরোধ সত্য ও সঠিক সংবাদের। আমরাও চাই আপনারা ব্যাংক খাতে ঘটে যাওয়া অপরাধ বিষয়ে প্রতিবেদন করেন।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করেছেন কী না—এমন খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাইদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে তিনি জানেন না।

সভায় ডেপুটি গভর্নর খুরশীদ আলম বলেন, “ব্যাংক খাতে কাজ করতে যেয়ে নানা রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। অনেক সময় অনেক গ্রুপের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া যায় না কিংবা নিতে দেওয়া হয় না। তাতে নানা রকমের চাপের মুখোমুখি হতে হয়।”ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার বলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তন ঘটলে আরও অনেক বিষয়ে পরিবর্তন আসে। এখানেও পরিবর্তন আসবে।

তিনি বলেন, “খেলাপি ঋণ নিয়ে নানা রকমের আইন রয়েছে। তবে নানা চাপের কারণে এটা প্রয়োগ করা সম্ভব হয় না। তবে সামনে এ বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আমি মনে করি।”

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, মো. হাবিবুর রহমান ও মো. খুরশীদ আলম, নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।

ইআরএফের পক্ষ থেকে সভাপতি রেফায়েত উল্ল্যাহ মীরধা ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ ব্যাংক খাতে কাজ করা সাংবাদিকরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা পরবর্তী

সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা

কমেন্ট