এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব

এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব

এনবিআরের আয়কর বিভাগের কর অঞ্চল-১৫ এর কমিশনার আহসান হাবিবের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাঠানো হয়।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া চট্টগ্রামের ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এস আলমের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বৃহস্পতিবার সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়ে তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।

এনবিআরের আয়কর বিভাগের কর অঞ্চল-১৫ এর কমিশনার আহসান হাবিবের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাঠানো হয়।

চিঠিতে এস আলমের (সাইফুল আলম) স্ত্রী ফারজানা পারভীন, মা চেমন আরা বেগম এবং ভাই আবদুল্লাহ হাসানের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও দিতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে তাদের পিতা-মাতা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে বা বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা সব ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাঠাতে হবে।

এর মানে, এস আলমসহ তাঁর পুরো পরিবারের সদস্যদের যাবতীয় ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে এনবিআর।

এ ছাড়া সাইফুল আলমের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যও চাওয়া হয়েছে কর অঞ্চল থেকে।

দেশের ৯১টি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সব শাখা থেকে তাদের হিসাব পাঠাতে বলা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ব্যাংক ও আর্থিক খাতেও পালাবদলের হাওয়া লাগে। তখন আবার আলোচনায় আসে এস আলমের নাম; যার বিরুদ্ধে আগের সরকারের সময় ‘প্রভাব’ খাটিয়ে ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের মালিকানায় আসার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশে এস আলম গ্রুপসহ এস আলমের নামে ও বেনামে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির নামে বিপুল ঋণ দেওয়ার অভিযোগ উঠতে থাকে।

সরকার পতনের পরদিনই বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপকে বিতাড়িত করার দাবি ওঠে। এ নিয়ে গোলাগুলির মতো ঘটনাও ঘটে। তার মালিকানাধীন আরেক ব্যাংক এসআইবিএলেও বিক্ষোভ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এর মধ্যেই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অনিয়ম ও অবৈধ সুবিধা নিয়ে এস আলম ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির নামে এবং অন্য কোম্পানির নামে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ার খবর এসেছে।

এসব ঘটনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার এনবিআর থেকে ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হল।

চিঠিতে এস আলমের স্ত্রী, মা ও ভাইয়ের নাম ছাড়া অন্য কারও নাম সুস্পষ্ট না থাকায় তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের হিসাব সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলে পাঠানোর সময় করদাতা কোম্পানির পূর্ণ নাম, ই-টিআইএনসহ সকল প্রকার ব্যবসায়িক ও আবাসিক ঠিকানা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে এস আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীন ও ভাই আবদুল্লাহ হাসানের পরিচয় হিসেবে এস আলম লাক্সারি চেয়ার কোচ সার্ভিস ও এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল লিমিটেডের পরিচালক বলা হয়েছে। এস আলমের মা চেমন আরা বেগম এস আলম লাক্সারি চেয়ার কোচ সার্ভিসের পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনুসন্ধান চলার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস।

গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএফআইইউ এর ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তবে তারপর তার এ অনুসন্ধানের অগ্রগতি নিয়ে তেমন তথ্য আর সামনে আসেনি।

‘টাকা পাচারকারীদের শান্তিতে ঘুমাতে দেয়া হবে না’ পরবর্তী

‘টাকা পাচারকারীদের শান্তিতে ঘুমাতে দেয়া হবে না’

কমেন্ট