ইসলামী ব্যাংকে নতুন পর্ষদ, চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ
ঢাকার দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত ১২ আগস্ট দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ব্যাংকটির পুরনো কর্মীরা পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে ‘লুটেরাদের’ বের করে দেওয়ার দাবি তোলে।
এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া ইসলামী ব্যাংকে নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই ব্যাংকে পাঁচজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে। তিনি ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক এবং ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রূপালী ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এক চিঠিতে ইসলামী ব্যাংককে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন পর্ষদের অন্য পরিচালকেরা হলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, আল–আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জলিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক এম মাসুদ রহমান ও সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ আব্দুস সালাম।
এর মধ্যে আব্দুস সালাম বেশ আগে ব্যাংকটির স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বৃহস্পতিবার এই নিয়োগ অনুমোদন করেন বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া চিঠিতে ইসলামী ব্যাংকের আগের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ওই পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আহসানুল আলম। তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের ছেলে।
এর আগে গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির বেশির ভাগ শেয়ার এস আলম গ্রুপের হাতে থাকায় আপাতত স্বতন্ত্র পরিচালক দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দেননি, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। টাকা উদ্ধারে আইনগত যত পন্থা আছে, সবই অনুসরণ করা হবে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে। ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্য ব্যাংকগুলো নিয়েও একই সিদ্ধান্ত হবে।
২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির মালিকানা নেওয়ার পর থেকে নামে-বেনামে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গ্রুপ।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্টদের হাতে ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। তবে ইসলামী ব্যাংকসহ এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয় ব্যাংকে তাদের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
কমেন্ট