এবার সালমানমুক্ত হলো আইএফআইসি ব্যাংক

এবার সালমানমুক্ত হলো আইএফআইসি ব্যাংক

বুধবার ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এমডি মেহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের পর্ষদ গঠন করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বেসরকারি আইএফআইসি ব্যাংককে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আলোচিত নাম সালমান এফ রহমানের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করা হয়েছে।

ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে গঠন করা হয়েছে নতুন পর্ষদ। আর তাতেই বাদ পড়েছেন দেশের শীর্ষ এই ব্যবসায়ী; এতদিন যিনি ছিলেন আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান।

বুধবার ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এমডি মেহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের পর্ষদ গঠন করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

পরিচালনা পর্ষদের অন্য পাঁচ সদস্য হলেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবতাদুল ইসলাম, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদ জহির, চার্টার্ডা অ্যাকাউন্টেন্ট কাজী মো. মাহবুব কাশেম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ মনজুরুল হক।

ব্যাংকটিতে সরকারের ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এই শেয়ারের প্রতিনিধি হিসাবেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা ও যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ মনজুরুল হককে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো ‘ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন ও পর্ষদে পরিচালক নিযুক্তি’ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, “ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০২৩ পর্ষন্ত সংশোধিত) এর ধারা ৪৭ এর উপ-ধারা (১) এবং ৪৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি’র পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে।

“আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং ব্যাংকিং সুশান নিশ্চিতকল্পে ও জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ছয় সদস্যের পরিছালকের সমন্বয়ে পুনর্গঠন করা হলো।”

২০১৫ সাল থেকে আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন সালমান এফ রহমান। তার ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানও ব্যাংকটির পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে সরকার পরিবর্তনের পরপরই তিনি বাদ পড়েন।

ব্যাংকটিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সালমান এফ রহমান এটি থেকে নামে-বেনামে নানা কৌশলে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া বন্ড ও সুকুক ছেড়েও টাকা তুলেছেন ব্যাংক ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে।

তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই সাবেক সরকার সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মতো সালমান এফ রহমানও পলাতক ছিলেন। ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট থেকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।

দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর একে একে আটটি বেসরকারি ব্যাংক বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয়েছে। এসব ব্যাংকের প্রতিটিই নানা সমস্যার কারণে তারল্যসংকটে ভুগছিল। পাশাপাশি সদ্য ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব ব্যাংকে নানা ধরনের অনিয়ম হয়েছে, সেই ব্যাংকগুলোর পরিচালক পর্ষদ বদলে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আল-আরাফাহ্ ও কমার্স ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন পরবর্তী

আল-আরাফাহ্ ও কমার্স ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন

কমেন্ট