রিজার্ভ চুরি পর্যালোচনায় আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে কমিটি

রিজার্ভ চুরি পর্যালোচনায় আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে কমিটি

কমিটিকে আগামী তিন মাসের মধ্যে সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচিত রিজার্ভ চুরির ঘটনা পর্যালোচনা করতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে সভাপতি করে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ছয় সদস্যের এই কমিটি গঠনের কথা জানিয়ে বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

কমিটিকে আগামী তিন মাসের মধ্যে সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে। নতুন কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা করবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। প্রয়োজনে সদস্য অন্তর্ভূক্ত করতে পারবে এই কমিটি। এছাড়া প্রয়োজন অনুসারে সভাও করতে পারবে।

নতুন গঠন করা কমিটির বাকি পাঁচ সদস্য হলেন – সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক আলী আশফাক এবং রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল হুদা।

কমিটিকে ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তকাজের অগ্রগতি ও এ বিষয়ে সরকারের নেওয়া অন্যান্য পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করা, এ ঘটনার দায়দায়িত্ব নির্ধারণ এবং এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।

২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সুইফট কোডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। সেই সময়ে চুরি করা এসব টাকা পাঠানো হয়েছিল ফিলিপিন্সের তিনটি ক্যাসিনোতে।

তার মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার। তারা বাংলাদেশ সরকারকে সেই টাকা বুঝিয়েও দেয়। তবে বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর উদ্ধার করা যায়নি।

রিজার্ভ চুরির ঘটনার তিন বছর পর ২০১৯ সালে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের আশায় নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ওই মামলা খারিজের আবেদন করে আরসিবিসি।

২০২২ সালের এপ্রিলে নিউ ইয়র্কের আদালত আরসিবিসির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলাটি খারিজ করে দেয়। মামলার রায়ে বলা হয়, ওই মামলা বিচারের ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ার’ ওই আদালতের নেই।

এরপর বাংলাদেশ বাংকের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কের ‘এখতিয়ারভুক্ত’ আদালতে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলা করা হয় বলে জানানো হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা ছিল, দেশের ভেতরেরই কোনও একটি চক্রের সহায়তায় এসব অর্থ পাচার হয়েছে।

পরে সিআইডির তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানসহ মোট ১৩ জন সরকারি কর্মকর্তাকে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করার কথা বলা হয়।

ওই বছরের ১৫ মার্চ রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দায়ের করা ওই মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

এখন মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি। কিন্তু দফায় দফায় সময় নিয়েও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি সংস্থাটি। ফলে আদালতে একের পর এক শুনানি পেছাচ্ছে। এরইমধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও বদল হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পালাবদলের পর দুদক গত ৩১ ডিসেম্বর সিআইডিতে চিঠি দিয়ে মামলার তদন্তের দায়িত্ব চায়। যদিও এ বিষয়ে সিআইডির তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি।

আরও ৩ ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী

আরও ৩ ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

কমেন্ট