বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বাড়ছে
প্রস্তাবিত বাজেটে বয়স্ক ও বিধবা ভাতাসহ সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ এবং ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বয়স্ক ভাতা বাড়ছে ১০০ টাকা; বিধবা ভাতা বাড়ছে ৫০ টাকা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এ প্রস্তাব করেন।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫৭ লাখ ১ হাজার জন থেকে ৫৮ লাখ ১ হাজার জনে উন্নীতের প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি তাদের মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করার প্রস্তাব করেছেন।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট আর নানামুখী চাপের মধ্যে দাঁড়িয়েও ‘স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে’ যাত্রার চ্যালেঞ্জ নিয়ে ২০২৩-২৪ নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আমাদের সরকারের মৌলিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং বর্তমান আর্থসামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আগামী অর্থবছরের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে যৌক্তিকভাবে সাজিয়েছি। আগামী অর্থবছরে সামাজিক সুরক্ষা খাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপকারভোগীর সংখ্যা ও ভাতার হার পরিবর্তন করা হয়েছে।”
বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৪ লাখ ৭৫ হাজার থেকে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার জনে উন্নীত করার প্রস্তাবও করেন অর্থমন্ত্রী। সেইসঙ্গে এই নারীদের প্রতি মাসের ভাতা ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৫৫০ টাকা করার প্রস্তাব করেছেন।
এছাড়া প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৩ লাখ ৬৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৯ লাখ করার প্রস্তাব করেছেন মন্ত্রী।
শিক্ষার্থীদের মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তির হারও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক স্তরে ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৮০০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৯০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫০ টাকা করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৮১৫ জন থেকে ৬ হাজার ৮৮০ জনে উন্নীত করা এবং বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৬০০ জন থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার ৬২০ জনে উন্নীতের প্রস্তাব করেছেন মুস্তফা কামাল।
অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমে উপকারভোগীর সংখ্যা ৬৯ হাজার ৫৭৩ জন থেকে ৮২ হাজার ৫০৩ জনে এবং বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪৫ হাজার ২৫০ জন থেকে ৫৪ হাজার ৩০০ জনে উন্নীত করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ২১ হাজার ৯০৩ জন থেকে বাড়িয়ে ২৬ হাজার ২৮৩ জন করার প্রস্তাব করা হয়।
সরকারের মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ৫৪ হাজার জন থেকে বাড়িয়ে ১৩ লাখ ৪ হাজার জনে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
এছাড়া অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কার্যক্রমে উপকারভোগীর ভাতার হার দৈনিক ২০০ টাকার পরিবর্তে ৪০০ টাকা করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
মুস্তফা কামাল বলেন, “ভাতাভোগী ও ভাতার সংখ্যা পরিবর্তন ছাড়াও সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে লক্ষ্যভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য একে জি-টু-পি পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসছি। ইতোমধ্যে ২৫টি ক্যাশভিত্তিক কর্মসূচির মধ্যে ২২টি কর্মসূচির অর্থ এ পদ্ধতিতে সরাসরি উপকারভোগীর ব্যাংক হিসাব/মোবাইল ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হচ্ছে।
“আগামী অর্থবছরে অবশিষ্ট ক্যাশভিত্তিক কর্মসূচিসমূহকে জি-টু-পি পদ্ধতির আওতায় আনা হবে। বর্তমানে ৮০ শতাংশের অধিক ক্যাশভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা জি-টু-পি পদ্ধতিতে প্রদান করা হচ্ছে।”
কমেন্ট