করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা
বাজারের আগুনে চড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি থেকে কিছুটা রেহাই দিতে প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়েছে। ৩ লাখ টাকা থেকে এই সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ যাদের বার্ষিক আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার কম, তাদের কোনো কর দিতে হবে না।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের যে বাজেট উপস্থাপন করেন, তাতে এই প্রস্তাব রয়েছে।
করোনা মহামারি শুরুর পর প্রথম বাজেটে (২০২০-২১) করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছিল। তারপর চার বছর করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকাই ছিল। সাধারণত চার-পাঁচ বছর পরপর জীবনযাত্রার ব্যয় ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় এই সীমা বাড়ানো হয়।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির কারণে সম্মানিত করদাতাগণের প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছে এবং অন্যদিকে করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সম্মানিত করদাতাগণের কর প্রদানে স্বাচ্ছন্দতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমি কোম্পানি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ব্যতীত অন্যান্য শ্রেণীর করদাতা, বিশেষ করে স্বাভাবিক ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাগণের করমুক্ত আয়সীমা কিছুটা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছি। এতে ব্যক্তি করদাতাদের করভার লাঘব হবে বিধায় করদাতারা নিয়মিতভাবে কর পরিশোধে উৎসাহিত হবেন বলে আশা করা যায়।’
অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল তার পঞ্চম বাজেটের কর প্রস্তাবে সাধারণ পুরুষ করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছেন।
মহিলা ও ৬৫ বছর বা তার উপরে বয়সের করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করা হয়েছে।
প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি করদতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া গেজেটভুক্ত যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে।
তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাত বা অভিভাবকের ক্ষেত্রে প্রত্যেক প্রতিবন্ধী সন্তান বা পোষ্যের জন্য করমুক্ত সীমা ৫০ হাজার টাকা বেশি।
ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা, করহার এবং করধাপ ২০২০-২১ অর্থবছর হতে অপরিবর্তিত ছিলো।
করধাপ ও করহার
প্রস্তাবিত বাজেটে করহার আগের মতই সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন নিয়মে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর শূন্য। সাড়ে তিন লাখের পরের ১ লাখের উপরে ৫ শতাংশ। এর পরের তিন লাখের উপরে ১০ শতাংশ। এর পরের ৪ লাখের উপরে ১৫ শতাংশ।
পরবর্তী ৫ লাখের উপরে ২০ শতাংশ আর বাকি টাকার উপরে ২৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
কমেন্ট