বিমানবন্দরের সামনে আন্ডারপাস নিমার্ণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

বিমানবন্দরের সামনে আন্ডারপাস নিমার্ণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দরের সামনে নির্মাণাধীন আন্ডারপাসের নকশা দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

বহুল আলোচিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে দেশের দীর্ঘতম আন্ডারপাস নির্মাণের পথ আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। এই বিমানবন্দরে নেমে যাত্রীরা যাতে নিরাপদে রেল ও সড়কপথের যান ধরতে পারেন, সেজন্য এক কিলোমিটারের বেশি এই আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য এক হাজার ১৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন।

সভায় এই প্রকল্পসহ মোট ১৬ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যাতে ব্যয় হবে ২৪ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা।

‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পথচারী আন্ডারপাস’ শীর্ষক প্রকল্পটির কাজ ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে শেষ করা হবে বলে প্রকল্পের কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই আন্ডারপাসের দৈর্ঘ্য হবে ১ হাজার ৭০ মিটার (১.০৭ কিলোমিটার)। এর মাধ্যমে হাজী ক্যাম্প, আশকোনা, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, এমআরটি স্টেশন, বিআরটি স্টেশনে গিয়ে যাত্রী উঠতে পারবেন।

বিমানবন্দরের সব টার্মিনালের যাত্রী এবং সাধারণ পথচারীদের জন্য নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক পারাপারের জন্য এটি তৈরি করা হবে বলে প্রকল্পের কার্যপত্রে বলা হয়েছে।

“প্রকল্প এলাকার ১৫ হাজার ১৯৬ বর্গমিটার মাটি শিট পাইলিংয়ের মাধ্যমে মজবুত করা হবে। ২ লাখ ৮৩ হাজার ঘনমিটার মাটি খনন ও ভরাট করা হবে।”

আন্ডারপাসটিতে নয়টি প্রবেশ ও বহির্গমন পথ থাকবে। এগুলো হলো: হজ ক্যাম্প, আশকোনা, বিমান বন্দর রেলওয়ে (বিআরটি) স্টেশন, বিমানবন্দর টার্মিনাল-১, ২ এবং ৩, বিমান বন্দর উত্তর গেট, দক্ষিণ গেট এবং এমআরটি স্টেশন। প্রস্তাবিত আন্ডারপাস ব্যবহার করে হজ ক্যাম্প থেকে সরাসরি বিমানবন্দরের টার্মিনালে যাওয়া যাবে।

আবার বিমানবন্দর টার্মিনাল থেকে সরাসরি এমআরটি (মেট্রোরেল) স্টেশনে যাওয়া যাবে।

সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পমন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি বলেন, সভায় মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ২৪ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১২ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ১১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ১৬ কোটি টাকা যোগান দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, শিল্প শক্তি বিভাগের সদস্য আব্দুল বাকী এবং আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোছাম্মৎ নাসিমা বেগম।

অনুমোদন পাওয়া অন্যান্য প্রকল্প হচ্ছে

>> সৌরবিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ প্রকল্প; ব্যয় ২০০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

>> বিসিএস (কর) একাডেমির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম পর্যায়) প্রকল্প; ব্যয় ১১৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

>> জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ (১ম সংশোধনী) প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ৬০ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

>> সুনামগঞ্জ-মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরিগঞ্জ-হবিগঞ্জ মহাড়কের শাল্লা-জলসুখা সড়কাংশ নির্মাণ (১ম সংশোধনী) প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ২২৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। 

>> বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশনের স্টেশনগুলোর সিগন্যালিং ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প; ব্যয় ৬৪৮ কোটি টাকা।

>> ইকোনমিক এক্সেলারেশন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ফর নিট প্রকল্প; ব্যয় ৩ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকা।

>> খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ১৩৩ কোটি টাকা।

>> গ্রামীণ মাটির রাস্তাগুলো টেকসইকরতে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ৯৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

>> তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (সেক্টর) (৩য় সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ৮৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

>> ইম্প্রুভিং আরবান গভর্ন্যান্স অ্যন্ড ইনফ্রাসট্রাকচার প্রকল্প; ব্যয় ৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা।

>> রুরাল কানেকটিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরসিআইপি) (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ব্যয় বাড়ছে ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা।

>> চট্টগ্রাম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প; ব্যয় ৩ হাজার ১১০ কোটি টাকা।

>> গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজার-চিলমারী উপজেলা সদর দপ্তরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১৪৯০ মি. দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (৩য় সংশোধিত) প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৩৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

>> রাজশাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প; ব্যয় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

এবং

>> নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; ব্যয় ২ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা।

 

 

এডিপি বাস্তবায়নে মন্থরগতি নিয়েই শেষ হচ্ছে অর্থবছর পরবর্তী

এডিপি বাস্তবায়নে মন্থরগতি নিয়েই শেষ হচ্ছে অর্থবছর

কমেন্ট

এই সংক্রান্ত আরও খবর