ওমান থেকে এলএনজি আমদানির দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি
সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ওমান থেকে সরকারি পর্যায়ে ১০ বছর মেয়াদী এই এলএনজি আমদানি চুক্তি সই হয়।
ওমান থেকে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানির জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই করেছে পেট্রোবাংলা এবং ওমানের প্রতিষ্ঠান ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী ওমান থেকে ২০২৬ সালের পর থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত সর্বোচ্চ বছরে দেড় মিলিয়ন মেট্রিক টন এলএনজি আনা যাবে।
সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ওমান থেকে সরকারি পর্যায়ে ১০ বছর মেয়াদী এই এলএনজি আমদানি চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে পেট্রোবাংলার পক্ষে পেট্রোবাংলার সচিব রুচিরা ইসলাম এবং ওমানের পক্ষে ওকিউটির নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী সই করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সরকারি পর্যায়ে (জিটুজি) এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে পেট্রোবাংলা ও ওকিউটির সাথে ২০১৮ সালের ৬ মে এলএনজির সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এসপিএ) প্রথম চুক্তি সই হয়েছিল।
দ্বিতীয় চুক্তি অনুযায়ী, ওকিউটি দশ বছর মেয়াদে (২০২৬ সালে ৪ কার্গো এলএনজি, ২০২৭ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ১৬ কার্গো এলএনজি এবং ২০২৯ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ২৪ কার্গো এলএনজি) বাংলাদেশকে এলএনজি সরবরাহ করবে।
২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কাতার গ্যাসের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদী (২০১৮-২০২৩) ১.৮-২.৫ এমটিপিএ (মিলিয়ন টন/বছর) এলএনজি (বর্তমানে ২.৫ এমটিপিএ), ৪০ কার্গো এলএনজি এবং ২০২৩ সালের ১ জুন কাতার এনার্জি ট্রেডিং-এর সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদী (২০২৬-২০৪০) দ্বিতীয় চুক্তিতে অতিরিক্ত ১.৫ এমটিপিএ এলএনজি আমদানির চুক্তি সই হয়েছিল।
বর্তমানে বিদ্যমান দুটি চুক্তির আওতায় ৩.৫ থেকে ৪.০ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। বিদ্যমান দুটি এফএসআরইউ (ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল)-এর মাধ্যমে সহজেই ৬.৫ এমটিপিএ এলএনজি গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
সে হিসেবে আরও ২.৫-৩.০ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা যেতে পারে। এছাড়া মহেশখালীতে ৩য় এফএসআরইউ, পায়রায় একটি এফএসআরইউ স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, “জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই এলএনজি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বাংলাদেশ গ্যাস অনুসন্ধান কাজ জোরদার করেছে। গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের জন্য পিএসসিকে হালনাগাদ করা হচ্ছে।”
এ সময় তিনি ওমানসহ সংশ্লিষ্টদের আগত পিএসসিতে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানান।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফ্ফার আলবুলুসি, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, ওকিউটির নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী বক্তব্য রাখেন।
গ্যাস স্বল্পতায় চাহিদা মেটাতে ২০১৮ সালে করা প্রথম চুক্তির আওতায় বর্তমানে ওমান থেকে বছরে এক এমটিপি (১৬ কার্গো) এলএনজি আমদানি করছে বাংলাদেশ।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ কাতার থেকেও দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় এলএনজি আনা হচ্ছে। এর বাইরে স্পট মার্কেট (খোলা বাজার) থেকেও এলএনজি কিনছে সরকার।
কাতারের সঙ্গে বিদ্যমান দুটি চুক্তির আওতায় ৩ দশমিক ৫ থেকে ৪ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।
সোমবার ওমানের সঙ্গে নতুন চুক্তির আওতায় এলএনজির ইউনিট মূল্য নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা তৌফিক ইলাহী বলেন, “দামের বিষয়টি প্রকাশ করতে পারব না, এটা আমাদের বিজনেস সিক্রেট। পৃথিবীর কোনো দেশে এ ধরনের চুক্তির ক্ষেত্রে দাম প্রকাশ করা হয় না।”
কমেন্ট