থাইল্যান্ডের মত ‘শুকনো ফল’ দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী
থাইল্যান্ডের ব্যাংকক চাতুচাক মার্কেট শুকনো ফলের দোকান। ছবি: সংগৃহীত
মৌসুমি ফল ও সবজি শুকিয়ে বাজারজাত করতে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধাননমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
থাইল্যান্ড, লাউস, ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্সসহ অনেক দেশ এই কাজ করে জানিয়ে তিনি প্রশ্ন করেছেন, “বাংলাদেশ কেন পারবে না।”
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই আসে সরকার প্রধানের এই নির্দেশ।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “থাইল্যান্ড, লাউস, ভিয়েতনাম ফিলিপিন্সসহ অনেক দেশ মৌসুমি ফল ও সবজি উন্নত প্রক্রিয়াজাত করে, ফল শুকিয়ে বোতলজাত করে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি ডলার কামায়। আমরা কেন পারব না?”
এ জন্য প্রয়োজনীয় সংরক্ষণাগার তৈরির জন্য কৃষিমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশও দেন শেখ হাসিনা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংগ্রহ ও সংরক্ষণে প্রযুক্তির অভাবে দেশে ২৫ শতাংশ ফল নষ্ট হয়ে যায়।
বর্তমানে দেশে ৭০ প্রজাতির বেশি ফল চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে ৪৫ প্রজাতির ফল। মোট উৎপাদিত ফলের ৫৩ শতাংশ বাণিজ্যিক বাগান থেকে আসে।
আর বসতভিটা ও তত্সংলগ্ন এলাকা থেকে আসে বাকি ৪৭ শতাংশ ফলের জোগান। দেশে বর্তমানে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, কলা, কুল, পেঁপে, আনারস ছাড়াও ড্রাগন, রাম্বুটান, স্ট্রবেরি, মালটাসহ বিভিন্ন বিদেশি ফলও চাষ হচ্ছে।
নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা হয়
একনেক সভার আলোচনায় নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যার বিষয়টি নিয়েও কথা হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, “একটি কথা উঠেছিল যে, যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, শুধু খাদ্যসামগ্রী নয়, নির্মাণ সামগ্রীরও দাম বাড়ছে, এটা আমাদের জন্য বেশ উদ্বেগের। রড, সিমেন্ট, বালু, পাথর, ইট ইত্যাদি সবকিছুর দাম বাড়ছে।
“আমরা যখন প্রকল্প তৈরি করি এবং অনুমোদন করি তখন যে রেট ধরি, প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে হতে এটার দাম পরিবর্তন হয়ে যায়। এটা আমরা স্বীকার করি। এটা নিয়ে আজকে আলোচনা হয়েছে। এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, ‘হ্যাঁ আমরা জানি এটা হবেই’।”
এরপর ‘রেট শিডিউল’ যৌক্তিকভাবে হালনাগাদ করতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশ আসে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, “ডলারের দাম যেভাবে পরিবর্তন হয়েছে, এটাও প্রকল্পের সার্বিক ব্যয়কে প্রভাবিত করে। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা যেন সঙ্গে সঙ্গে তা বিবেচনায় নেই।”
চলমান কিছু প্রকল্পের কর সংক্রান্ত বেশ কিছু মামলা ঝুলে থাকার কথাও বলেন মান্নান। তিনি বলেন, “আইনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেছেন, ট্যাক্স সংক্রান্ত অন্যান্য সংক্রান্ত মামলাগুলো যেন বের করে আনতে পারেন।”
নোয়াখালীর উড়িচ্চরে ক্রস ড্যাম নির্মাণের দাবি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে সাবধানতার সঙ্গে কাজ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মান্নানের ভাষ্য, শেখ হাসিনা বলেছেন, “উপকূল নিয়ে খুব সাবধানে ডিল করতে হবে। বাংলাদেশের উপকূল একটি পলিমাটির বা কাদামাটির উপকূল, হার্ড রক নয় এখানে। আমাদের শত শত দ্বীপ আছে চ্যানেল আছে এখানে। এখানে হাত দেওয়ার আগে দুই বার তিন বার সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে।”
এ বিষয়ে বিবেচনা করতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান এম এ মান্নান।
কমেন্ট