শুল্ক আরোপের পর পেঁয়াজের দাম বাড়ার কথা ভারতকে জানালেন বাণিজ্যমন্ত্রী

শুল্ক আরোপের পর পেঁয়াজের দাম বাড়ার কথা ভারতকে জানালেন বাণিজ্যমন্ত্রী

শুক্রবার ভারতের জয়পুরে অনুষ্ঠিত জি-২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের সভার আগে পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পেঁয়াজের দামের বিষয়টি তোলেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় বাংলাদেশে মসলাজাতীয় এই পণ্যটির দাম বেড়ে গেছে বলে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

শুক্রবার ভারতের জয়পুরে অনুষ্ঠিত জি-২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের সভার আগে পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পেঁয়াজের দামের বিষয়টি তোলেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম এমনিতেই চড়ছিল। এরই মধ্যে গত ২০ আগস্ট ভারত পণ্যটি রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এর পর দাম আরও বেড়ে যায়। 

ভারত সরকার শুল্ক আরোপের আগে বাংলাদেশে দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৫-৫৫ টাকা কেজি। পাঁচ দিন ধরে বাড়তে বাড়তে শুক্রবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে। পাড়া-মহল্লার দোকানে ১০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। 

আর ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এক লাফে উঠেছে ৮০ টাকায়। 

এই বিষয়টিই ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে অবহিত করেছেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

 

জবাবে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বিশ্বব্যাপী উৎপাদনে ব্যাঘাত, সরবরাহের ঘাটতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট অসুবিধাগুলো কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত। প্রতিকূল আবহাওয়া এবং মূল্যস্ফীতির কারণে কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন ঘাটতিতে ভুগছে ভারতও। এ কারণে ভারত সরকারকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তিনি বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে বলেন, “ভারত খুব শিগগিরই এ সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।” 

এসময় ভারত থেকে বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে লক্ষ্যে প্রস্তাবিত প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের ওপর থেকে এন্টি ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ করলে পীযূষ গোয়েল এ বিষয়ে সর্বোচ্চ বিবেচনার আশ্বাস দেন। 

এছাড়া অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে উপস্থাপন এবং এগুলো নিষ্পত্তি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। 

ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী জি-২০ মন্ত্রী পর্যায়ের ঘোষণা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূল্যবান অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বকে মূল্যায়ন করে থাকে। 

বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী জি-২০ এর প্রেসিডেন্সি হওয়ায় ভারতকে অভিনন্দন জানান এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরামে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। 

পরে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সৌদি আরবের বাণিজ্যমন্ত্রী এমই মাজিদ আল কাসাবির সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। 

এসময় ৮ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আসন্ন বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলে দুই মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। 

বৃহস্পতি ও শুক্রবার (২৪ ও ২৫ আগস্ট) জয়পুরে অনুষ্ঠিত জি-২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের সভায় যোগ দিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এখন ভারতের জয়পুরে অবস্থান করছেন। 

সভায় দেওয়া বক্তব্যে টিপু মুনশি বাংলাদেশসহ গ্র্যাজুয়েশন ট্র্যাকে থাকা দেশগুলোকে ২০২৬ সালের পর এলডিসি দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য শুল্কমুক্ত কোটা মুক্ত বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সমর্থন দিতে জি-২০ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। 

আগামী ১৩তম ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্সে এলডিসি থেকে উত্তরণপ্রাপ্ত দেশগুলোর পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনি জি-২০ দেশের মন্ত্রীদের অনুরোধ করেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

সরকারি চাকরির আবেদনেও ভ্যাট পরবর্তী

সরকারি চাকরির আবেদনেও ভ্যাট

কমেন্ট

এই সংক্রান্ত আরও খবর