আমদানি করা ডিম দেশে আসবে এ সপ্তাহেই: বাণিজ্যমন্ত্রী
রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিপণনের অক্টোবর মাসের কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে আমদানি করা ডিম দেশে আসবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিপণনের অক্টোবর মাসের কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান ডিমের বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজারে ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও বাজারদর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১৫ কোটি ডিম আমদানির জন্য ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠান এলসি খুলেছে। আশা করা হচ্ছে চলতি সপ্তাহে ডিম আমদানির প্রথম চালান দেশে প্রবেশ করবে।”
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধেগতির মধ্যে গত দুই মাস ধরে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির মাংসের উচ্চমূল্য মানুষকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মত প্রতিটি ফার্মের ডিমের খুচরা দাম ১২ টাকা, প্রতিকেজি আলু ৩৫ টাকা এবং প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
কিন্তু তাতেও বাজার ঠাণ্ডা না হওয়ায় ১৭ সেপ্টেম্বর ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে মন্ত্রণালয়। এপর্যন্ত ১৫টি কোম্পানিকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ডিম আমদানির জন্য প্রতিটি চালানের জন্য বেশ কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি হল রপ্তানিকারক দেশের সরকারের মাধ্যমে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মুক্ত মর্মে সনদ দাখিল করতে হবে।
দেশে এর আগে ডিম আমদানি না হওয়ায় এই সনদ পেতে আমদানিকারদের কিছুটা সময় লাগছে এবং সে কারণে ডিম আসতে দেরি হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, “আমরা দেশে এখনো আলু আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিইনি। দেশে আলুর পর্যাপ্ত মজুদ আছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। বাজার মনিটরিং চলছে।”
যদি দাম আরো বাড়ে, তাহলে কৃষিমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনে আলু আমদানির উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সরকার টিসিবির মাধ্যমে দেশের এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মাঝে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় করছে। তেল, চিনি, ডালের পাশাপাশি জুলাই থেকে চাল দেওয়া শুরু হয়। এ মাস থেকে পেঁয়াজ দেওয়া শুরু হল, যা আপাতত রাজধানীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।”
টিপু মুনশি বলেন, “টিসিবির কার্ড বিতরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এক কোটি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ মাসের শেষ নাগাদ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করতে পারব বলে আশা করছি। এটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণেরও অংশ।”
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিদিনের খুচরা বাজার দর অনুযায়ী, রোববার রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি হালি ফার্মের ডিম ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ হিসাবে প্রতিটি ডিমের দাম পড়ে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা; ডজন ১৬৫ টাকা।
রাজধানীর বাজারগুলোতে অবশ্য প্রতি ডজন ডিম ১৭০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মত আলু ও পেঁয়াজের সঙ্গে ডিমের দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। ওই দিন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংবাদ সম্মেলন করে খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১২ টাকা করে বিক্রি করতে দর বেঁধে দিয়েছিলেন।
কিন্তু গত এক মাসে দেশের কোথাও এই দরে ডিম বিক্রি হয়নি।
১২ টাকায় ডিম বিক্রি করবে বিপিএ
রাজধানীর ২০ জায়গায় ১২ টাকায় ডিম বিক্রি করবে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সোমবার ঢাকার কারওয়ান বাচারে টিসিবি চত্ত্বরে এই ডিম বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেবন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
রোববার বিপিএ-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কমেন্ট