অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সোনার ভরি ১ লাখ ২ হাজার ৮৭৬ টাকা

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সোনার ভরি ১ লাখ ২ হাজার ৮৭৬ টাকা

বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাজুস স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে।

সোনার দাম আরও বেড়েছে। দশ দিনের ব্যবধানে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার ভরি  ২ হাজার ৩৩২ টাকা বাড়ানোর বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস।

এর ফলে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে দেশের বাজারে এক ভরি সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যরেট) সোনা এখন ১ লাখ ২ হাজার ৮৭৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১ লাখ ৫৪৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য মানের সোনার দরও একই হারে বেড়েছে।

শুক্রবার থেকে নতুন এই দর কার্যকর হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে বাজুসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার থেকে সারা দেশে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা ১ লাখ ২ হাজার ৮৭৬ টাকায় টাকায় বিক্রি হবে।

এর আগে টানা তিন দফা মূল্যবান এই ধাতুর দাম কমানোর পর গত ১১ অক্টোবর ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। পরের দিন ১২ অক্টোবর থেকে সেই দর কার্যকর হয়।

এর পর ১৫ অক্টোবর ভরিতে ১ হাজার ১৬৬ টাকা বাড়ানো হয়। ১৬ অক্টোবর থেকে সেই দর কার্যকর হয়।

সবশেষ শুক্রবার থেকে সোনার দাম আরেক দফা বেড়েছে।

সমিতির যুক্তি, স্থানীয় বাজারে পাকা সোনার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দর সমন্বয় করা হয়েছে।

চলতি বছরের ২০ জুলাই দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২২ ক্যারেট সোনার দাম এক লাখ টাকা ছাড়িয়েছিল। তখন ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে হয়েছিল ১ লাখ ৭৭৭ টাকা। মাঝে কিছুটা কমলেও ১৬ অক্টোবর আবার দাম বাড়ে। তখন প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ৫৪৪ টাকায় ওঠে।

জুয়েলার্স সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের পাশাপাশি অন্যান্য মানের সোনার দামও বেড়েছে। ২১ ক্যারেট সোনার ভরিতে ২ হাজার ২১৬ টাকা বেড়েছে।

হলমার্ক করা ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এখন ৯৮ হাজার ২১১ টাকা। আর ১৮ ক্যারেটের সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৯৮৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮৪ হাজার ২১৪ টাকা।

আর সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ১ হাজার ৫৭৫ টাকা বেড়ে ভরিপ্রতি নতুন দাম হয়েছে ৭০ হাজার ১৫৯ টাকা।

সোনার দাম ভরিতে লাখ টাকা ছাড়ালেও দেশের বাজারে রুপার দাম অবশ্য অপরিবর্তিত আছে। হলমার্ক করা প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা।

আর হলমার্ক করা প্রতি ভরি ২১ ক্যারেট রুপার দাম পড়বে ১ হাজার ৬৩৩ টাকা।

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়। তার আগের বছর সোনার ভরি ছিল ১৫৪ টাকা। ২০০০ সালে সোনার ভরি বেড়ে ৬ হাজার ৯০০ টাকায় দাঁড়ায়। ২০১০ সালে এই মূল্যবান ধাতুর দাম বেড়ে ৪২ হাজার ১৬৫ টাকায় ওঠে। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে সোনার দাম প্রায় আড়াই গুণ বেড়েছে।

মূলত করোনা মহামারীর পর বিশ্বব্যাপী সোনার দামে অস্থিরতা দেখা দেয়। তখন ‘সেফ হ্যাভেন’বা ‘নিরাপদ বিনিয়োগ’হিসেবে সোনাকেই বেছে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

এতে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। করোনার পর সোনার দাম কিছুটা কমলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর আবার বাড়ে।

গত বছরের শেষ দিকে সোনার দাম কিছুটা কমে। চলতি বছর আবার দামি এই ধাতুর দাম বাড়তে থাকে।

গত মে মাসে আবার আউন্সপ্রতি সোনার দাম ২ হাজার ৫০ ডলারে পৌঁছায়। তারপর দাম নিম্নমুখী থাকলেও চলতি মাসে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরুর পর আবার বাড়তে থাকে।

বাজুসের নেতারা বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ছে। অন্যদিকে স্থানীয় টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের দামও অনেক বেড়ে গেছে। সে কারণে দেশের বাজারে সোনার ভরি লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।

বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাজুস স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে।

আন্তর্জাতিক বাজার

গত কয়েক দিনে আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দাম বেশ খানিকটা বেড়েছে। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায় আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম, ২.৬৫ ভরি) সোনা ১ হাজার ৯৮৭ ডলার ১৩ সেন্টে বিক্রি হয়েছে।

১৫ অক্টোবর বাজুস যখন সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৯৩২ ডলার ২৮ সেন্ট।

বিশ্বে সোনাকেই সবচেয়ে স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য পণ্য হিসেবে ধরা হয়। বলা হয়, একমাত্র এই পণ্যটির দরেই সাধারণত বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা দেখা যায় না। এটি কিনে রাখলে লোকসানের ভয় নেই।

সে কারণেই সোনার প্রতি সবার এত আকর্ষণ। ৫০ বছর আগে কেউ সোনা কিনে রাখলেও তা ভালো বিনিয়োগ হিসেবেই বিবেচিত। শেয়ারবাজার, ডলার বা অন্য কিছু-এই নিশ্চয়তা দেয় না।

ঢাকায় ট্রাকে করে ১২ টাকায় ডিম বিক্রি শুরু পরবর্তী

ঢাকায় ট্রাকে করে ১২ টাকায় ডিম বিক্রি শুরু

কমেন্ট