খোলাবাজারে ডলার ১২০.২০, ব্যাংকে ১১১ টাকা
ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করেছে দুই-তিন টাকা বেশি দরে। রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক বৃহস্পতিবার ১১৩ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি করেছে। বেসরকারি সিটি ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল) বিক্রি করেছে ১১৪ টাকায়।
নানা উদ্যোগ-পদক্ষেপের পরও ‘অস্থির’ ডলারের বাজার ‘সুস্থির’ হচ্ছে না। দিন যত যাচ্ছে; সংকট ততই বাড়ছে। বেড়েই চলেছে ডলারের দর। কমছে টাকার মান।
খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দর ১২০ টাকা ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতি ডলার ১২০ টাকা ২০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে।
এ অবস্থায় আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দর আরও ৫০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করে প্রতি ডলারের দাম নিয়েছে ১১১ টাকা। যা এত দিন ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করেছে এর থেকে দুই-তিন টাকা বেশি দরে। রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক বৃহস্পতিবার ১১৩ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি করেছে। বেসরকারি সিটি ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল) বিক্রি করেছে ১১৪ টাকায়।
কেনা ও বেচার ক্ষেত্রে আন্তঃব্যাংকে ডলারের সর্বোচ্চ দর ১১১ টাকা নির্ধারণ করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা আগের চেয়ে ৫০ পয়সা বেশি।
বৃহ্স্পতিবার ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডলারের বিনিময় হারের এটিই সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।
এর আগে ৫০ পয়সা বাড়িয়ে গত মঙ্গলবার রাতে কেনা ও বেচা উভয় ক্ষেত্রেই ডলারের দর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি)।
পাশাপাশি সংগঠন দুটি সিদ্ধান্ত নেয়, প্রবাসী আয় দেশে আনতে রেমিটেন্সের বিপরীতে ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া প্রণোদনার কোনো ঊর্ধ্বসীমা থাকবে না।
তবে শর্ত দেওয়া হয়, যে দরেই রেমিটেন্স আনা হোক না কেন, ১১১ টাকার বেশি দরে বিক্রি করতে পারবে না কোনো ব্যাংক।
বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকরের কথা বাফেদার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বুধবার থেকে সেই দর কার্যকর হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ওবেসাইটে নতুন দরের কেনা-বেচার তথ্য প্রকাশ করা হয় বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার পর।
ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দেওয়া বাফেদার চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সব ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা কেনার বেলায় প্রতি ডলার ৫০ পয়সা বাড়িয়ে দর নির্ধারণ করা হয় ১১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং বিক্রির দর হবে সর্বোচ্চ ১১১ টাকা।
এতে সেবাখাতসহ সব ধরনের রপ্তানি আয়, বিদেশ থেকে আসা সব ধরনের আয়ে ডলারের দর হবে ১১০ টাকা ৫০ পয়স।
রেমিটেন্স আনতে এই দরের সঙ্গে সরকার আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিয়ে আসছে। তাতে রেমিটেন্স পর্যায়ে ডলারের দর হবে ১১৩ টাকার সামান্য বেশি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সব পর্যায়ে ডলার বিক্রিতে (আমদানি, আন্তঃব্যাংক, বিদেশে অর্থ প্রেরণ) বিনিময় হার হবে সর্বোচ্চ ১১১ টাকা।
বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে সংগঠন দুটি সময়ে সময়ে ডলারের দর র্নিধারণ করে দিচ্ছে।
নানা কারণে চাপে থাকা রিজার্ভ কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে হুন্ডি বন্ধে ডলারের দর বাজারমুখী করার পরামর্শ দিয়ে আসছেন অর্থনীতিবিদরা।
এর আগে এবিবি ও বাফেদার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আনতে সরকারের দেওয়া আড়াই শতাংশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংক নিজস্ব তহবিল থেকে আরও আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিতে পারবে।
খোলাবাজারে ১২০.২০ টাকা
বৃহস্পতিবার খোলাবাজারে এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হয়েছে ১২০ টাকা ২০ পয়সা। বুধবার লেগেছিল ১১৯ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা।
দেশের বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউজ ও ডলার কেনাবেচার সঙ্গে জড়িতদের সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মতিঝিলের এক ডলার ব্যবসায়ী এআরএইচ ডট নিউজকে বলেন, “বৃহস্পতিবার আমরা ১১৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১১৯ টাকা ৮০ পয়সায় ডলার কিনেছি। আর বিক্রি করেছি ১২০ টাকা ২০ পয়সায়।”
কমেন্ট