শুল্ক-কর কমাতে কাজ করছি: এনবিআর চেয়ারম্যান
রোজার মাস সামনে রেখে ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের ওপর শুল্ক-কর কিছুটা কমাতে গত সোমবার এনবিআরে চিঠি পাঠিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই চিঠির বিষয়ে এনবিআর কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান।
রমজান মাস সামনে রেখে কিছু পণ্যে আমদানি শুল্ক ও কর কমাতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর কাজ করছে। তবে কোন কোন পণ্যে শুল্ক কমানো হবে তা জানাননি এনবিআর চেয়ারম্যান।
রোজার মাস সামনে রেখে ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের ওপর শুল্ক-কর কিছুটা কমাতে গত সোমবার এনবিআরে চিঠি পাঠিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই চিঠির বিষয়ে এনবিআর কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার কাস্টমস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের চেয়ারম্যান এ কথা জানান। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, “রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কিছু পণ্যের শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেছে। আমরা সেই প্রস্তাব পেয়েছি। এনবিআর এ নিয়ে কাজ করছে। শুল্ক কমানো হলে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য তিনটির দাম কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।”
চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্যতেলে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) কমানো এবং চিনিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) প্রত্যাহারের কথা বলেছে। এ ছাড়া শুল্ক-কর কমানোর অনুরোধ করা হয়েছে খেজুরের ওপর।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে নিত্যপণ্যের সরবরাহ, মজুত ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
বছরে ২০ লাখ টন চাহিদার চিনি আমদানিতে বর্তমানে পাঁচ ধরনের শুল্ক-কর আছে। প্রতি টন অপরিশোধিত চিনিতে আগে আমদানি শুল্ক ছিল নির্ধারিত তিন হাজার টাকা। গত নভেম্বরে তা কমিয়ে অর্ধেক, অর্থাৎ ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়। এর বাইরে অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি), ৩ শতাংশ অগ্রিম কর (এআইটি) ও ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) আছে।
পরিশোধিত চিনিতে বর্তমানে আমদানি শুল্ক নির্ধারিত ৩ হাজার টাকা, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, এআইটি ৫ শতাংশ, এআইটি ৫ শতাংশ ও আরডি আছে ৩০ শতাংশ। দুই ধরনের চিনিতে এ শুল্ক-কর কাঠামো আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই দুই ধরনের চিনি আমদানিতেই ৩০ শতাংশ আরডি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে এনবিআরকে।
বর্তমানে বছরে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়, বাকি ১৮ লাখ টন আমদানি করতে হয়। ভোজ্যতেল আমদানির ওপর বর্তমানে ভ্যাট রয়েছে ১৫ শতাংশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার এনবিআরকে এই ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার অনুরোধ করেছে।
ভোজ্যতেলের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সয়াবিন ও পাম তেলের ওপর ২০২২ ও ২০২৩ সালজুড়ে কয়েক দফায় ভ্যাট ছাড় দিয়েছে সরকার। সর্বশেষ ভ্যাটছাড় সুবিধা ছিল গত বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। আমদানি পর্যায়ে শুধু ৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ছাড়-সুবিধা বহাল রাখার অনুরোধ জানালেও এনবিআর আর তা মানেনি। ফলে বর্তমানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আছে।
কমেন্ট