বস্তায় লেখা থাকবে চালের দাম
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, “বস্তার গায়ে মিলগেটের দাম, ধানের জাত এবং উৎপাদন তারিখ উল্লেখ করতে হবে। এতে মিলগেটের দর জানতে পারবেন ক্রেতারা।”
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মজুতবিরোধী অভিযান শুরু করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। এ অভিযানের ফলে বাজারে চালের দাম কমেছে বলে দাবি করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিদিনের খুচরা বাজার দর অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৮ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে এই চাল ৫০ থেকে ৫৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মাঝারি মানের চাল ৫২ থেকে ৫৬ টাকা থেকে কমে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চালের দাম ছিল ৬০ থেকে ৭৫ টাকা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও শেওড়াপাড়া বাজারে টিসিবির দামের চেয়ে এই তিন ধরনের চাল কেজিতে ২/৩ টাকা বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে, গত সপ্তাহের চেয়ে ১/২ টাকা কমেছে।
এই পরিস্থিতিতে মজুত বাড়িয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির প্রবণতা ঠেকাতে বস্তার গায়ে চালের মূল্য লেখা থাকতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, “বস্তার গায়ে মিলগেটের দাম, ধানের জাত এবং উৎপাদন তারিখ উল্লেখ করতে হবে। এতে মিলগেটের দর জানতে পারবেন ক্রেতারা।”
মঙ্গলবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
অবৈধ মজুত বিরোধী অভিযানের ফলে মিলগেট থেকে খুচরা সব পর্যায়ে চালের দাম কমেছে বলে দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী।
সভায় কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম (টিটু) উপস্থিত ছিলেন।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর আইন প্রতিরোধ) আইন ২০২৩ এর বিধি প্রণয়নের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন হবে।
“আইন বাস্তবায়ন হলে ছাঁটাই করে চালের পুষ্টিকর অংশ বাদ দেওয়া বন্ধ হবে। বস্তার গায়ে মিলগেটের দাম, ধানের জাত এবং উৎপাদন তারিখ উল্লেখ থাকবে। এতে চালে বাড়তি মুনাফা করার প্রবণতা কমে আসবে ব্যবসায়ীদের মনে করছে সরকার।”
খুচরা বিক্রেতা কেজিপ্রতি ৪-৫ পাঁচ টাকা লাভ করতে চায় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “মিলগেট আর খুচরা বাজারে দামের বিস্তর ফারাক। এখন সকল পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের লাভ করার প্রবণতা খুব বেশি।”
সভায় কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ বলেন, “অসৎ ব্যবসায়ীদের কারণে কৃষক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করা হবে। বস্তার গায়ে মিলগেট চালের মূল্য লেখা থাকলে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।”
সভায় জানানো হয়, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যাবেন। তার আগেই চার পণ্যের শুল্ক কমানোর প্রজ্ঞাপন হবে।
মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার পদক্ষেপের মধ্যে আগামী রমজান মাসে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সভায় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা সাধারণ মানুষের কাছে দৃশ্যমান করতে হবে। রমজানের আগে নিত্যপণ্যের সরবরাহ নির্বিঘ্ন করে ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হবে।
খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাখাওয়াত হোসেনসহ তিন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
কমেন্ট