সর্বোচ্চ উচ্চতায় সোনার দর, ভরি ১১২৯০৮ টাকা

সর্বোচ্চ উচ্চতায় সোনার দর, ভরি ১১২৯০৮ টাকা

২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়েছে ২ হাজার ১১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের ২ হাজার ১০০ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৮০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা বেড়েছে।

দেশের বাজারে সোনার দাম বেড়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে প্রতি ভরি সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ১ লাখ ১২ হাজার ৯০৮ টাকায় উঠেছে; বেড়েছে ২ হাজার ১১৬ টাকা বেড়েছে। দেশের বাজারে এটিই এখন পর্যন্ত সোনার সর্বোচ্চ দাম।

বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে এই দামে বিক্রি হবে মূল্যবান এই ধাতু।

অন্যান্য মানের সোনার দামও একই হারে বেড়েছে। সবশেষ ১৮ জানুয়ারি সবচেয়ে ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৭৫০ টাকা কমিয়েছিল দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। তার একদিন আগে ১ হাজার ৪০০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।

বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা ১ লাখ ১২ হাজার ৯০৮ টাকায় বিক্রি হবে। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ৭ হাজার ৭৭৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের সোনা ৯২ হাজার ৩৭৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৭৬ হাজার ৯৮২ টাকায় বিক্রি হবে।

হিসাব করে দেখা যায়, ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়েছে ২ হাজার ১১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছে ২ হাজার ১০০ টাকা। এছাড়া ১৮ ক্যাটের সোনার ভরি ১ হাজার ৮০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম বেড়েছে ১ হাজার ৫১৬ টাকা।

বুধবার পর্যন্ত দেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনা ১ লাখ ১০ হাজার ৬৯১ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৫ হাজার ৬৭৬ টাকায়, ১৮ ক্যারেট ৯০ হাজার ৫৭১ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৭৫ হাজার ৪৬৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

গত ২০২৩ সালে দেশের বাজারে সোনার দাম দফায় দফায় বেড়েছিল। ফলে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

বাজুসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৩ সালে সব মিলিয়ে ২৯ বার সোনার দামে সমন্বয় করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ বার দাম কমানো ও ১৮ বার বাড়ানো হয়েছে।

২০২২ সালের শুরুতে (জানুয়ারি) ভালো মানের, অর্থাৎ হলমার্ক করা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ছিল ৮৮ হাজার ৪১৩ টাকা। এরপর কয়েক দফা দাম বাড়ার পর গত ২১ জুলাই দেশের বাজারে প্রথমবারের মতো প্রতি ভরি সোনার দাম লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

গত বছরের ২০ জুলাই দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২২ ক্যারেটের সোনার দাম এক লাখ টাকা ছাড়িয়েছিল। তখন ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে হয়েছিল ১ লাখ ৭৭৭ টাকা।

মাঝে কমে লাখ টাকার নিচে নেমে এসেছিল। ১৬ অক্টোবর বেড়ে ফের লাখ টাকা ছাড়ায়।

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়। তার আগের বছর সোনার ভরি ছিল ১৫৪ টাকা। ২০০০ সালে সোনার ভরি বেড়ে ৬ হাজার ৯০০ টাকায় দাঁড়ায়। ২০১০ সালে এই মূল্যবান ধাতুর দাম বেড়ে ৪২ হাজার ১৬৫ টাকায় ওঠে। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে সোনার দাম আড়াই গুণের বেশি বেড়েছে।

মূলত করোনা মহামারীর পর বিশ্বব্যাপী সোনার দামে অস্থিরতা দেখা দেয়। তখন ‘সেফ হ্যাভেন’বা ‘নিরাপদ বিনিয়োগ’হিসেবে সোনাকেই বেছে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

এতে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। করোনার পর সোনার দাম কিছুটা কমলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর আবার বাড়তে থাকে; বর্তমানে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছে।

গত কয়েক দিনে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম বেশ খানিকটা বেড়েছে। টানা বাড়তে বাড়তে বুধবার রাত ৮টায় প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম, ২.৬৫ ভরি) সোনার দাম ছিল ২ হাজার ১৩৭ ডলার। আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে ৮ ডলার ৬০ সেন্ট বা দশমিক ৪০ শতাংশ।

বিশ্বাজারে সোনার দর এর আগে কখনই এত উচ্চতায় উঠেনি।

সোনার দাম বাড়ানো হ‌লেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।

মূল্যস্ফীতির পারদ কিছুটা নেমেছে পূর্ববর্তী

মূল্যস্ফীতির পারদ কিছুটা নেমেছে

এলপিজির দাম আরও বাড়ল পরবর্তী

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

কমেন্ট