মাছ মাংসসহ ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দিল সরকার
তালিকায় রয়েছে বেসনের নামও। বলা হয়েছে এক কেজি বেসনের উৎপাদন খরচ ৭৪ দশমিক ৩৭ টাকা। যা উৎপাদক পর্যায়ে ৮৪ দশমিক ৮৭ টাকায়, পাইকারিতে ৯৯ দশমিক শূন্য দুই টাকায় এবং খুচরা বাজারে ১২১ দশমিক ৩০ টাকায় বিক্রি করতে হবে।
এবার পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ও সবজিসহ ২৯টি খাদ্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। নতুন নির্ধারিত দর অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে গরুর মাংস কেজিতে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা এবং খাসির মাংস এক হাজার ৩ টাকা ৫৬ পয়সা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ করিমের সই করা এ–সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ৪(ঝ) ধারার ক্ষমতাবলে কতিপয় নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত দামে কৃষিপণ্য ক্রয়–বিক্রয়ের অনুরোধ করা হলো।”
দাম নির্ধারণ করে দেওয়া ২৯টি পণ্যের উৎপাদন খরচ কত তা–ও তুলে ধরা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। এর ভিত্তিতে উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পণ্যগুলোর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
যেমন ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৪৫ টাকা ৭৮ পয়সা। তা উৎপাদক পর্যায়ে ১৫১ টাকা ৮১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৬২ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা কেজি দরে বিক্রি করতে হবে।
একইভাবে গরুর মাংসের উৎপাদন খরচ ৫৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৬০৫ টাকা ১৩ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৬৩১ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সায় বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কেজিতে মুগ ডালের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৫ টাকা ৪১ পয়সা, মাসকালাই ১৬৬ টাকা ৫০ পয়সা, ছোলা (আমদানি) ৯৮ টাকা ৩০ পয়সা, মসুর ডাল (উন্নত) ১৩০ টাকা ৫০ পয়সা, মসুর ডাল (মোটা) ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা, খেসারি ডাল ৯২ টাকা ৬১ পয়সা, পাঙাস (চাষের মাছ) ১৮০ টাকা ৮৭ পয়সা, কাতল (চাষ) ৩৫৩ টাকা ৫৯ পয়সা।
ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা, সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা, ডিম প্রতি পিস ১০ টাকা ৪৯ পয়সা, দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৬৫ টাকা ৪০ পয়সা, দেশি রসুন প্রতি কেজি ১২০ টাকা ৮১ পয়সা, আমদানি করা আদা প্রতি কেজি ১৮০ টাকা ২০ পয়সা, শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ৩২৭ টাকা ৩৪ পয়সা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৬০ টাকা ২০ পয়সা, বাঁধাকপি কেজিপ্রতি ২৮ টাকা ৩০ পয়সা, ফুলকপি কেজিপ্রতি ২৯ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কেজিপ্রতি বেগুন ৪৯ টাকা ৭৫ পয়সা, শিম ৪৮ টাকা, আলু ২৮ টাকা ৫৫ পয়সা, টমেটো ৪০ টাকা ২০ পয়সা, মিষ্টি কুমড়া ২৩ টাকা ৩৮ পয়সা, জাহিদি খেজুর ১৮৫ টাকা ৭ পয়সা, চিড়া (মোটা) ৬০ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
তালিকায় রয়েছে বেসনের নামও। বলা হয়েছে এক কেজি বেসনের উৎপাদন খরচ ৭৪ দশমিক ৩৭ টাকা। যা উৎপাদক পর্যায়ে ৮৪ দশমিক ৮৭ টাকায়, পাইকারিতে ৯৯ দশমিক শূন্য দুই টাকায় এবং খুচরা বাজারে ১২১ দশমিক ৩০ টাকায় বিক্রি করতে হবে।
রমজানে দাম বেড়ে যাওয়া সাগর কলা এক হালি খুচরা পর্যায়ে ২৯ দশমিক ৭৮ টাকায় বিক্রি করতে বলা হয়েছে।
পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ মূল্যে পণ্য বেচাকেনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
রোজা সামনে রেখে গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইফতারির অন্যতম উপকরণ খেজুরের দুটি ধরনের দাম নির্ধারণ করে দেয়। বাজারে খেজুরের দাম চড়া—বেশ কিছুদিন ধরে এই অভিযোগ ওঠার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপ নিলেও বাজারে ওই দামে খেজুর বিক্রি হচ্ছে না।
অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বেঁধে দিয়ে আসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু বেঁধে দেওয়া দামে এই দুটি পণ্য কখনই বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায় না।
মাঝে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম বেঁধে দেওয়া হলেও সেই দামে পণ্য মেলেনি বাজারে।
কমেন্ট