সোনার ভরি নামল ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকায়

সোনার ভরি নামল ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকায়

টানা বাড়তে বাড়তে গত ১৮ এপ্রিল অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২২ ক্যারেট সোনার ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল। এর পর থেকে সোনার দাম কমছেই। ফাইল ছবি

সোনার দাম কমেছেই। দেশের বাজারে যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে চড়েছিল মূল্যবান এই ধাতুর দর; এখন সেই একই গতিতে নামছে। সোমবারও সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ১৫৫ টাকা কমিয়েছে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস।

অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছে।

টানা বাড়তে বাড়তে গত ১৮ এপ্রিল অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২২ ক্যারেট সোনার ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল। এর পর থেকে সোনার দাম কমছেই।

দেশে এখন এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ৯ হাজার ৫৫৬ টাকা লাগছে; অর্থাৎ এক ভরি সোনার দাম পড়ছে ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকা (১ ভরিতে ১১.৬৬৪ গ্রাম)।

২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগছে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৯৯ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগছে ৯১ হাজার ২০১ টাকা।

সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ হাজার ৮৩৯ টাকা ভরিতে।

আগের দিন রবিবার ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৩১৫ টাকা কমানো হয়েছিল। শনিবার কমানো হয়েছিল ৬৩০ টাকা। তার আগে টানা তিন দিনে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৫ হাজার ৮৬৮ টাকা কমানো হয়েছিল।

এ নিয়ে গত সাত দিনে ছয় দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৭ হাজার ৯৬৮ টাকা কমেছে।

সোমবার দুপুরে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাম কমানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম হ্রাস পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিকেল ৪টা থেকে নতুন কার্যকর হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

সোমবার দাম কমানোর আগে হলমার্ক করা প্রতিভরি ২২ ক্যারেটের সোনা ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৬ টাকায় বিক্রি হয়। ২১ ক্যারেটের সোনার দাম ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা এবং ১৮ ক্যারেট ৯২ হাজার ১৪৬ টাকায় বিক্রি হয়।

সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম ছিল ৭৬ হাজার ৬৩২ টাকা।

হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, এক দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম কমেছে ১ হাজার ১৫৫ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম কমেছে ১ হাজার ৯৬ টাকা। ১৮ ক্যারেটের কমেছে ৯৪৫ টাকা।

সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম কমেছে ৭৯৩ টাকা।

এর আগে ২১ এপ্রিল দেশের বাজারে সোনার দর বাড়িয়েছিল বাজুস। ওইদিন প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বাড়ানো হয়েছিল ৬৩০ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছিল ৬০৬ টাকা; ১৮ ক্যারেটের ৫১৩ টাকা। সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম বেড়েছিল ৪২০ টাকা।

তার আগের দিন ২০ এপ্রিল সব ধরনের সোনার দাম খানিকটা কমানো হয়েছিল। সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের দাম কমানো হয়েছিল ভরিতে ৮৪০ টাকা। অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছিল।

তার আগে ১২ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় সোনার দাম সাড়ে ৫ হাজার টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস।

এমনিতেই বেশ কিছু দিন ধরে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেশ চড়া ছিল। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ডামাডোলে তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়। প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম প্রায় ২ হাজার ৪০০ ডলারে উঠেছিল।

তবে গত কয়েক দিনে বেশ খানিকটা কমেছিল। সোমবার অবশ্য কিছুটা বেড়েছে; বিকেল সাড়ে ৪টায় আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৬ ডলার ৪১ সেন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৩৪২ ডলার ৬৮ সেন্টে বিক্রি হয়েছে।

বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।

কোভিড মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার হ্রাস করবে, বাজারে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পরও বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়তে থাকে।

ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতায় মূল্যবান এই ধাতুর দাম পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকে।

রোজার ঈদের আগে দেশের বাজারে দুই দিনের ব্যবধানে সবচেয়ে ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ৫০০ টাকা বাড়ানো হেয়ছিল।

গত ৬ এপ্রিল বাড়ানো হয় ভরিতে ১ হাজার ৭৫০ টাকা। দুদিন বাদে ৮ এপ্রিলও বাড়ানো হয় ১ হাজার ৭৫০ টাকা।

ঈদের পর গত ১৮ এপ্রিল আবার বাড়ানো হয়েছিল দাম। সেই দফায় বাড়ানো হয় ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা। তাতে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড দর।

সোনার দাম কমছেই পরবর্তী

সোনার দাম কমছেই

কমেন্ট

এই সংক্রান্ত আরও খবর