সোনার ভরি নামল ১ লাখ ৯ হাজার টাকায়

সোনার ভরি নামল ১ লাখ ৯ হাজার টাকায়

গত দশ দিনে শুক্রবার ও পহেলা মে বুধবার সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই কমেছে সোনার দর।

সোনার দাম আরও কমেছে। দেশের বাজারে যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে চড়েছিল মূল্যবান এই ধাতুর দর; এখন সেই একই গতিতে নামছে। গত দশ দিনে আট দফা কমেছে সোনার দর।

বৃহস্পতিবার সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৮৭৮ টাকা কমিয়েছে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস। ভরি নেমে এসেছে ১ লাখ ৯ হাজার ১৬৩ টাকায়।

অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছে। শুক্রবার থেকে এই নতুন দর কার্যকর হবে।

টানা বাড়তে বাড়তে গত ১৮ এপ্রিল অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২২ ক্যারেট সোনার ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল। এর পর থেকেই দেশের বাজারে নিম্মমূখী হয় সোনার দর।

গত দশ দিনে শুক্রবার ও পহেলা মে বুধবার সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই কমেছে সোনার দর।

দেশে এখন এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ৯ হাজার ৩৫৯ টাকা লাগবে; অর্থাৎ এক ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ৯ হাজার ১৬৩ টাকা (১ ভরিতে ১১.৬৬৪ গ্রাম)।

২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ৪ হাজার ১৯৫ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ৮৯ হাজার ৩১১ টাকা।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৭৪ হাজার ২৭৬ টাকায়।

মঙ্গলবার ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৪২০ টাকা কমানো হয়েছিল। ২১ ক্যারেটের কমেছিল ৪০০ টাকা। ১৮ ক্যারেটের কমে ৩৩৮ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম কমেছিল ২৮০ টাকা।

এ নিয়ে আট দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ২৬৬ টাকা কমেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাম কমানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম হ্রাস পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

শুক্রবার থেকে নতুন কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দাম কমানোর আগে হলমার্ক করা এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ৯ হাজার ৫২০ টাকা লেগেছে; প্রতি ভরিতে লেগেছে ১ লাখ ১১ হাজার ৪১ টাকা।

২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ৬ হাজার ২ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ৯০ হাজার ৮৬৩ টাকা। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার ৫৫৯ টাকা।

হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, এক দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম কমেছে ১ হাজার ৮৭৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের কমেছে ১ হাজার ৮০৮ টাকা। ১৮ ক্যারেটের কমেছে ১ হাজার ৫৫১ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম কমছে ১ হাজার ২৮৩ টাকা।

এর আগে ২১ এপ্রিল দেশের বাজারে সোনার দর বাড়িয়েছিল বাজুস। ওইদিন প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বাড়ানো হয়েছিল ৬৩০ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছিল ৬০৬ টাকা; ১৮ ক্যারেটের ৫১৩ টাকা। সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম বেড়েছিল ৪২০ টাকা।

তার আগের দিন ২০ এপ্রিল সব ধরনের সোনার দাম খানিকটা কমানো হয়েছিল। সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের দাম কমানো হয়েছিল ভরিতে ৮৪০ টাকা। অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছিল।

তার আগে ১২ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় সোনার দাম সাড়ে ৫ হাজার টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস।

এমনিতেই বেশ কিছু দিন ধরে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেশ চড়া ছিল। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ডামাডোলে তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়। প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম প্রায় ২ হাজার ৪০০ ডলারে উঠেছিল।

তবে গত কয়েক দিনে বেশ খানিকটা কমেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩৪ ডলার ৭৪ সেন্ট বা ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ কমে ২ হাজার ২৮৯ ডলার ৭৫ সেন্টে বিক্রি হয়েছে।

বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।

কোভিড মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।

ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতায় মূল্যবান এই ধাতুর দাম পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকে।

রোজার ঈদের আগে দেশের বাজারে দুই দিনের ব্যবধানে সবচেয়ে ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ৫০০ টাকা বাড়ানো হেয়ছিল।

গত ৬ এপ্রিল বাড়ানো হয় ভরিতে ১ হাজার ৭৫০ টাকা। দুদিন বাদে ৮ এপ্রিলও বাড়ানো হয় ১ হাজার ৭৫০ টাকা।

ঈদের পর গত ১৮ এপ্রিল আবার বাড়ানো হয়েছিল দাম। সেই দফায় বাড়ানো হয় ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা। তাতে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড দর।

১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৪৯ টাকা পরবর্তী

১২ কেজি এলপিজির দাম কমল ৪৯ টাকা

কমেন্ট

এই সংক্রান্ত আরও খবর