সোনার দাম আরও বাড়ল, ভরি ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা
সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছে ১ হাজার ১৭৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের বেড়েছে ১ হাজার ৩৩১ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ৯৫৬ টাকা।
সোনার দাম আরেক দফা বাড়ল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শনিবার সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতিভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৭৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে বাড়ানো হয়েছে।
বাজুসের ঘোষণা অনুযায়ী, রবিবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১০ হাজার ১৫৬ টাকা লাগবে; অর্থাৎ এক ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা (১ ভরিতে ১১.৬৬৪ গ্রাম)।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮২ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ৯৬ হাজার ৯১৬ টাকা।
আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৮০ হাজার ১৩২ টাকায়।
শনিবার পর্যন্ত হলমার্ক করা এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১০ হাজার ৫৫ টাকা লেগেছে। এক ভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮২ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫১ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ৯৫ হাজার ৯৬০ টাকা।
সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৭৯ হাজার ৩৩৯ টাকায়।
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছে ১ হাজার ১৭৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের বেড়েছে ১ হাজার ৩৩১ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ৯৫৬ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম বেড়েছে ৭৯৩ টাকা।
শনিবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার থেকে এই দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
টানা আট দফায় ভরিতে ১০ হাজার ২৬৬ টাকা কমানোর পর গত ৪ মে সবচেয়ে ভালো মানের সোনার দর ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস। পরের দিন ৫ মে বাড়ানো হয় ৭৩৫ টাকা। ৭ মে এক লাফে বাড়ানো হয় ভরিতে ৪ হাজার ৫০২ টাকা।
১২ মে বাড়ানো হয়েছিল ভরিতে ১ হাজার ৮৩২ টাকা।
এ নিয়ে পাঁচ দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৯ হাজার ২৯৭ টাকা বাড়ানো হলো।
টানা বাড়তে বাড়তে গত ১৮ এপ্রিল অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২২ ক্যারেট সোনার ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল।
এর পর নিম্মমূখী হয় সোনার দর। গত ৪ মে থেকে ফের বাড়ছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে; প্রতি আউন্সের দাম (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) ২ হাজার ৪০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩৫ ডলার ৬৯ সেন্ট বা ১ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৪১৩ ডলার ৯৩ সেন্টে উঠেছে।
গত ১২ মে বাংলাদেশে যখন সবশেষ সোনার দাম বাড়ানো হয়েছিল তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ৩১৯ ডলার ৩৬ সেন্ট।
বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।
কোভিড মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতায় মূল্যবান এই ধাতুর দাম বাড়তে থাকে।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২১ ক্যারেটে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৮ ক্যারেটে ৭৫ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা থাকে।
সনাতন পদ্ধতির সোনা পুরনো অলঙ্কার গলিয়ে তৈরি করা হয়। এ ক্ষেত্রে কত শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা মিলবে, তার কোনো মানদণ্ড নেই।
তবে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রূপা ১ হাজার ২৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কমেন্ট