জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল, কারণ ‘ডলার’

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল, কারণ ‘ডলার’

বৃহস্পতিবার রাতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দর নির্ধারণের কথা জানানো হয়, যা ১ জুন থেকে কার্যকর হবে।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও দেশের বাজারে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম আরেক দফা বাড়িয়েছে সরকার। দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে স্পষ্ট করে ডলারের দর বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দর নির্ধারণের কথা জানানো হয়, যা ১ জুন থেকে কার্যকর হবে।

নতুন দর অনুযায়ী, জুন মাসজুড়ে ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের বর্তমান মূল্য লিটারপ্রতি ১০৭ টাকা থেকে ৭৫ পয়সা বেড়ে ১০৭ টাকা ৭৫ পয়সা হবে। পেট্রোলের বর্তমান মূল্য লিটার ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে ১২৭ টাকা এবং অকটেনের বিদ্যমান মূল্য ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে ১৩১ নির্ধারণ করা হয়েছে।

চলতি মে মাসেও জ্বালানি তেলের দাম লিটারপ্রতি সর্বোচ্চ আড়াই টাকা করে বেড়েছিল।

এ মাসে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার ১০৬ টাকা থেকে এক টাকা বাড়িয়ে ১০৭ টাকা, পেট্রোলের দাম ১২২ টাকা থেকে আড়াই টাকা বাড়িয়ে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং অকটেনের দাম ১২৬ টাকা থেকে আড়াই টাকা বাড়িয়ে ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কিছুটা কমলেও মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এ মূল্য সমন্বয় করতে হয়েছে।

গত ৯ মে ডলারের বিনিময়মূল্য বাজারভিত্তিক করায় এক লাফে প্রতি ডলার ১১০ থেকে বেড়ে ১১৭ টাকায় পৌঁছায়।

তবে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল কেনাকাটায় এই বাড়তি দাম কতটা ভূমিকা রেখেছে তা পরিষ্কার নয়।

অনলাইন পোর্টাল অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের গড় মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৮৮ ডলার থেকে ৮৩ ডলারে নেমেছে।

শুক্রবারও বিশ্ববাজারে জ্বলানি তেলের দাম বেশ খানিকটা কমেছে। বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় অপরিশোধিত তেলের অন্যতম মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ ডলার ৬৭ সেন্ট বা ২ শতাংশ কমে ৮১ ডলার ৯৩ সেন্টে নেমে এসেছে।

আর ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১ ডলার ৩১ সেন্ট বা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ কমে ৭৭ ডলার ৯২ সেন্টে নেমে এসেছে।

গত মার্চ থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় ফর্মুলার আলোকে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করছে সরকার।

প্রথম দুই মাসে দাম কিছুটা কমলেও এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে দাম বাড়ছে।

জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের সূত্র নির্ধারণ করে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয় গত ২৯ ফেব্রুয়ারি। এতে বলা হয়, দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রল ব্যক্তিগত যানবাহনে অধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। তাই বাস্তবতার নিরিখে বিলাসদ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে সব সময় ডিজেলের চেয়ে অকটেন ও পেট্রলের দাম বেশি রাখা হয়।

অকটেন ও পেট্রল বিক্রি করে সব সময় মুনাফা করে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসি। মূলত ডিজেলের ওপর বিপিসির লাভ-লোকসান নির্ভর করে। দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের ৭৫ শতাংশই ডিজেল।

অকটেন ও পেট্রল ব্যবহার করা হয় গাড়ি ও মোটরসাইকেলে। আর বাস, ট্রাক, নৌযান এবং কিছু ক্ষেত্রে সেচ পাম্পে ডিজেল ব্যবহার করা হয়।

জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

সোনার দাম আরও কমেছে পরবর্তী

সোনার দাম আরও কমেছে

কমেন্ট

এই সংক্রান্ত আরও খবর