সোনার দাম আরও কমল
রবিবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ৯ হাজার ৯৩৫ টাকা লাগবে; অর্থাৎ এক ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৮২ টাকা।
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও কমেছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ২৯৫ টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। রবিবার থেকে এই দর কার্যকর হবে।
অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছে।
ছয় দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ৩৮২ টাকা বাড়ানোর পর গত ২৪ মে ১ হাজার ৮৫ টাকা কমানো হয়েছিল। একদিন পর ২৬ আরও ১ হাজার ২৮৩ টাকা কমানো হয়।
এ নিয়ে ১৭ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে কমেছে ৩ হাজার ৬৬৩ টাকা।
বাজুসের ঘোষণা অনুযায়ী, রবিবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ৯ হাজার ৯৩৫ টাকা লাগবে; অর্থাৎ এক ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৮২ টাকা।
১১.৬৬৪ গ্রামে এক ভরি।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১০ হাজার ৬১০ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ৯৪ হাজার ৮১৭ টাকা।
আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৭৮ হাজার ৩৮২ টাকায়।
শনিবার পর্যন্ত হলমার্ক করা এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১০ হাজার ৪৬ টাকা লেগেছে; এক ভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ১৭৭ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ১১ হাজার ৮৪৬ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ৯৫ হাজার ৮৬৬ টাকা।
সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৭৯ হাজার ২৫৭ টাকায়।
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম কমেছে ১ হাজার ২৯৫ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম কমেছে ১ হাজার ২৩৭ টাকা। ১৮ ক্যারেটের কমেছে ১ হাজার ৫০ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম কমেছে ৮৭৫ টাকা।
শনিবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার থেকে এই দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) এবং বাজুস নির্ধারিত গহনার নূন্যতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে দেশের সব ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
টানা আট দফায় ভরিতে ১০ হাজার ২৬৬ টাকা কমানোর পর গত ৪ মে সবচেয়ে ভালো মানের সোনার দর ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস। পরের দিন ৫ মে বাড়ানো হয় ৭৩৫ টাকা। ৭ মে এক লাফে বাড়ানো হয় ভরিতে ৪ হাজার ৫০২ টাকা।
১২ মে বাড়ানো হয় ভরিতে ১ হাজার ৮৩২ টাকা। ১৯ মে বাড়ানো হয়েছিল ১ হাজার ১৭৮ টাকা। ২০ মে ওই দর কার্যকর হয়েছিল।
সব মিলিয়ে ছয় দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ৩৮২ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।
টানা বাড়তে বাড়তে গত ১৮ এপ্রিল অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২২ ক্যারেট সোনার ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দামে বড় দরপতন হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই নিম্নমূখী ছিল বাজার। শনিবার প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৮৩ ডলার ১৫ সেন্ট বা ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ কমে ২ হাজার ২৯৩ ডলার ৮৪ সেন্টে নেমে এসেছে।
লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে গত ১৮ মে প্রতি আউন্সের দাম (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) ২ হাজার ৪২৩ ডলারে উঠেছিল। যা ছিল বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দর। এর পর থেকে নিম্মমূখী হয় মূল্যবান এই ধাতুর দর।
বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।
কোভিড মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতায় মূল্যবান এই ধাতুর দাম ঊর্ধ্বমূখী হয়েছিল।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২১ ক্যারেটে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৮ ক্যারেটে ৭৫ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা থাকে।
সনাতন পদ্ধতির সোনা পুরনো অলঙ্কার গলিয়ে তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে কত শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা মিলবে, তার কোনো মানদণ্ড নেই।
সোনার দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রূপা ১ হাজার ২৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কমেন্ট