দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এই মানের সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ৫৮১ টাকা বেড়েছে। অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাজুস।

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সোনার ভরি প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় উঠেছে। রবিবার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ২৯ হাজার ৯০২ টাকায় বিক্রি হবে। এর আগে কখনই দেশের বাজারে সোনার ভরি এত উচ্চতায় ওঠেনি।

দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এই মানের সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ৫৮১ টাকা বেড়েছে। অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

টানা কয়েক দফা বাড়ার পর গত ১ সেপ্টেম্বর ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে এক হাজার ৬২১ টাকা কমিয়েছিল বাজুস। ২ সেপ্টেম্বর থেকে ওই দর কার্যকর হয়। শনিবার পর্যন্ত এই মানের সোনা ১ লাখ ২৬ হাজার ৩২১ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তার আগে ২৫ আগস্ট ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে এক হাজার ৯৩৬ টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস। ২৬ আগস্ট থেকে ওই দর কার্যকর হয়। ভরি উঠেছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৯৪২ টাকায়।

তার তিন দিন আগে ২২ আগস্ট বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০৫ টাকা। ২০ আগস্ট বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫১৬ টাকা। ১৮ আগস্ট বাড়ানো হয়েছিল ২ হাজার ৯০৪ টাকা বাড়ানো হয়।

সব মিলিয়ে এক সপ্তাহে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ৭ হাজার ৮৬১ টাকা বেড়েছিল।

বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, রবিবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১১ হাজার ১৩৭ টাকা লাগবে। ১১.৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতি ভরি কিনতে লাগবে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯০২ টাকা।

২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ১ লাখ ৬ হাজার ২৮২ টাকা।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৮৭ হাজার ১৩ টাকায়।

রবিবার পর্যন্ত দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে লেগেছে ১০ হাজার ৮৩০ টাকা। ১১.৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতিভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩২১ টাকা।

২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৮২ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ১ লাখ ৩ হাজার ৩৫৫ টাকা।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৮৫ হাজার ৪৫০ টাকায়।

হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছে ৩ হাজার ৫৮১ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছে ৩ হাজার ৪১৮ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ২ হাজার ৯২৮ টাকা।

সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম বেড়েছে ১ হাজার ৫৬৩ টাকা।

শনিবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

বরিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।

বিশ্ববাজারেও রেকর্ড

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দাম রেকর্ড গড়েছে। শনিবার রাত সোয়া ৯টায় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২০ ডলার ২ সেন্ট বা দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৫৭৮ ডলার ২৪ সেন্টে উঠেছে।

গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে যখন দেশের বাজারে সোনার দাম কমানো হয়, তখন বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ৫০৩ ডলার ৩৪ সেন্ট।

বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।

মধ্যপাচ্যের চলমান অস্থিরতার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সোনার দাম বাড়ছে।

কোভিড মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।

ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে।

রুপার দাম অপরিবর্তিত

তবে সোনার দাম বাড়লে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম।

২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রূপা ১ হাজার ২৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।