সোনার ভরি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা
শনিবার পর্যন্ত এই মানের সোনা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ হিসাবে প্রতিভরিতে বেড়েছে ২ হাজার ৬১৩ টাকা।
অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে দেশের বাজারে সোনার ভরি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ছাড়াল; রবিবার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতিভরি সোনা এই দরে বিক্রি হবে।
শনিবার পর্যন্ত এই মানের সোনা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ হিসাবে প্রতিভরিতে বেড়েছে ২ হাজার ৬১৩ টাকা। অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
চার দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে সাড়ে ১২ হাজার টাকা বাড়ানোর পর গত ২৮ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ২৬০ টাকা কমিয়েছিল বাজুস। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ওই দর কার্যকর হয়।
তিন সপ্তাহ পর শনিবার রাতে ফের সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাজুস। রবিবার থেকে এই কার্যকর হবে।
বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, রবিবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১২ হাজার ৮ টাকা লাগবে। ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতি ভরি কিনতে লাগবে ১ লাখ ৪০ হাজার ৬১ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭০৪ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৯ টাকা।
আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৯৪ হাজার ১১৭ টাকায়।
শনিবার পর্যন্ত দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে লেগেছে ১১ হাজার ৭৮৪ টাকা। এক ভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৯৯ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা।
আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৯২ হাজার ২৮৬ টাকায়।
হিসাব বলছে, তিন সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছে ২ হাজার ৬১৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছে ২ হাজার ৫০৮ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ২ হাজার ১৪৬ টাকা।
সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম বেড়েছে ১ হাজার ৮৩১ টাকা।
শনিবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
বিশ্ববাজারেও রেকর্ড, প্রতি আউন্স ২,৭২২ ডলার
বিশ্ববাজারে সোনার দাম চড়ছেই। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছে মূল্যবান এই ধাতুর দর।
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৭০০ ডলার ছাড়িয়ে ২ হাজার ৭২২ ডলার ৩ সেন্টে উঠেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করার পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনায় ঝুঁকছেন। মূলত এ জন্যই সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার স্পট মার্কেটে সোনার দাম ছিল আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৬৮৮ দশমিক ৮৩ মার্কিন ডলার। শুক্রবার সকালে তা ২ হাজার ৭০৪ ডলার ৮৯ সেন্টে ওঠে। যা কিনা সর্বকালের সর্বোচ্চ।
শনিবার তা আরও বেড়ে ২ হাজার ৭২২ ডলার ৩ সেন্টে ওঠে। এক দিনের ব্যবধানে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ২৮ ডলার ২৭ সেন্ট। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে ১ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর দেশের বাজারে যখন সোনার কমানো হয় তখন বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৬৫৮ ডলার ৩৪ সেন্ট।
মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পাশাপাশি সোনার দর বৃদ্ধির পেছনে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার বড় ব্যবধানে কমানোর বিষয়টি ভূমিকা রেখেছে।
এর ফলে এক বছরের ব্যবধানে বিশ্বাজারে সোনার দাম বেড়েছে ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। ছয় মাসে বেড়েছে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর এক মাসের ব্যবধানে ৪ দশমিক ১১ শতাংশবেড়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘ সময় ধরে সংঘাত চলছে। সংঘাত চলছে বিশ্বের আরও অনেক দেশে। ফলে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা থেকে বিনিয়োগ নিরাপদ রাখতে অনেকেই সোনার দিকে ঝুঁকছেন বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়।
বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।
কোভিড মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে।
বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।
কোভিড মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে।
রুপা অপরিবর্তিত
তবে সোনার দাম বাড়লে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম।
২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রূপা ১ হাজার ২৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কমেন্ট