সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়ল
ভোজ্যতেল আমদানিতে কয়েকটি ধাপে শুল্ক কমানো হলেও বাজারে তেলের দাম কমেনি; উল্টো চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দেশে ভোজ্যতেলের বাজারে এর আগে কখনই এমনটা দেখা যায়নি।
এক মাস ধরে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে পাওয়া যাচ্ছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল; প্রায় উধাও হয়ে গেছে। পাড়া-মহল্লার দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও নানা অজুহাতে বেশি দাম রাখা হচ্ছে।
ভোজ্যতেল আমদানিতে কয়েকটি ধাপে শুল্ক কমানো হলেও বাজারে তেলের দাম কমেনি; উল্টো চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দেশে ভোজ্যতেলের বাজারে এর আগে কখনই এমনটা দেখা যায়নি।
এরই মধ্যে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে পরিশোধনকারীরা।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক শেষে দাম বৃদ্ধির এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার।
তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম হবে ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন বিক্রি হবে ১৫৭ টাকা দরে। এতদিন বোতলজাত এ তেলের দাম ১৬৭ টাকা এবং খোলা তেল ১৪৯ টাকা ছিল।
মোস্তফা হায়দার বলেন, “এক্স বন্ড, ইন বন্ড ভ্যালু এবং গত এক মাসে যে এলসি খোলা হয়েছে, তার ভ্যালু- এই তিনটা ভেল্যু যোগ ও গড় করে একটা দাম ঠিক করতে হয়। এর সঙ্গে বিভিন্ন প্রক্রিয়াকরণ খরচ, বোতলজাতকরণ খরচ যোগ করতে হয়। ২০১১ সাল থেকে এই পদ্ধতি চর্চা হয়ে আসছে।
“এখন থেকে প্রতি মাসে সরকারের সঙ্গে বসে তেলের দাম ঠিক করা হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন ভোজ্য তেলের দাম প্রতি টন ১২০০ ডলারের কাছাকাছি চলে গিয়েছে।”
রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ বাজারে দুই-তিন মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট চলছে, যা সম্প্রতি আরও তীব্র হয়েছে। অনেক দোকানে সয়াবিন তেলের বোতল মিললেও তা থেকে মূল্য ঘষে ফেলা হয়েছে। বেশি দামে বিক্রি নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই ক্রেতা-বিক্রেতা বিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “বাজারে এই মুহূর্তে সয়াবিন তেলের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি আছে বলেই গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ হিসেবে টারিফ কমিশনের সহযোগিতায় মূল্য পরিস্থিতি পুনর্ববিন্যাস করেছি।
“গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই থেকে এই পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে ২০ শতাংশের বেশি মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। এ কারণে স্থানীয় মজুদদারি বেড়েছে, কারণ সবার মধ্যে একটা শঙ্কা কাজ করছিল যে দেশের বাজারে মূল্য বৃদ্ধি ঘটতে পারে।”
তিনি বলেন, "সব রকম তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছি দেশে যে মজুদ রয়েছে—সন্তোষজনক; মজুদে কোনো ঘাটতি নেই। অন্যদিকে ছোট ছোট জায়গা থেকে শুরু করে সব জায়গায় এক ধরনের মজুদদারি তৎপরতা আমরা দেখতে পেয়েছি।
“এ ধরনের মজুদদারি তৎপরতার বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার কাজ করছে। অপরদিকে সরকারও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে মূল্য সমন্বয়ের বিষয়টি চিন্তা করেছে।"
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হচ্ছে। তবে আলুর দামে চরম অস্থিরতা এখনও আছে। তবে সেটাও নতুন আলু উঠলে দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে কমে আসবে বলে আশা করছি।
কমেন্ট