দেড় লাখের নিচে নামল সোনার ভরি
রবিবার থেকে ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৩ টাকায় বিক্রি হবে। শনিবার পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৭ টাকায়।
সোনার দাম আরও কমেছে। যেভাবে টানা চড়েছিল মূল্যবান এই ধাতুর দাম, এখন ঠিক একই ভাবে এখন নামছে। শনিবার সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দর ভরিতে আরও ২ হাজার ৬২৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর ফলে এই মানের সোনার ভরি দেড় লাখ টাকার নিচে নেমে এসেছে। রবিবার থেকে ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৩ টাকায় বিক্রি হবে। শনিবার পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৭ টাকায়।
চড়তে চড়তে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২২ ক্যারেটের সোনার ভরি ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৫ টাকায় উঠেছিল। যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
ছয় দিনের ব্যবধানে তিন দফায় ৬ হাজার ১৮২ টাকা কমে সেই সোনার ভরি দেড় লাখ টাকার নিচে নেমেছে।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বাজারেও সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে। টানা আট দফায় প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছিল ১৬ হাজার ২৩৬ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছিল ১৫ হাজার ৮২ টাকা।
বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, রবিবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১২ হাজার ৭১৮ টাকা লাগবে। ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতিভরি কিনতে লাগবে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৩ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৭৬টাকা।
আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৯৯ হাজার ৮৯০ টাকায়।
শনিবার পর্যন্ত এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১২ হাজার ৯৪৩ টাকা লেগেছে। প্রতিভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৭ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৭ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৫১০ টাকা।
সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৭২২ টাকায়।
হিসাব বলছে, দুই দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম কমেছে ২ হাজার ৬২৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম কমেছে ২ হাজার ৪৯৬ টাকা। ১৮ ক্যারেটের কমেছে ২ হাজার ১৩৫ টাকা।
সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরির দাম কমেছে ১ হাজার ৮৩১ টাকা।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা কমানো হয়েছিল। ২৩ ডিসেম্বর কমানো হয় ১ হাজার ২৪৮ টাকা।
১৯ ডিসেম্বর ২ হাজার ৮৮ টাকা বাড়ানো হয়েছিল; ১৫ ডিসেম্বর ১ হাজার ৭৭৩ টাকা কমানো হয়েছিল। ১২ ডিসেম্বর বাড়ানো হয় ১ হাজার ৮৭৮ টাকা।
এভাবে উঠানামার মধ্যে দিয়েই শেষ হয়েছিল ২০২৪ সাল। গত বছরে মূল্যবান এই ধাতুর দর ৩৫ বার বেড়েছিল; কমেছিল ২৭ বার।
তবে নতুন বছরে সোনার দাম টানা বাড়ছিল। প্রথম বাড়ে ১৫ জানুয়ারি, এরপর টানা আট বার বাড়ে। এরমধ্যে ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে বেড়েছিল তিন বার। আর চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ে পাঁচ বার।
এর পর বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশের বাজারেও সোনার দর নিম্মমূখী হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২২ ক্যারেটের দাম কমে ভরিতে ১ হাজার ১৫৫ টাকা। গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভরিতে ২ হাজার ৪০৩ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুন। যা শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়।
দুই দিন না যেতেই শনিবার রাতে আরও ২ হাজার ৬২৪ টাকা কমানো হয়েছে।
শনিবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
বিশ্ববাজারেও কমেছে
এদিকে বিশ্ববাজারেও সোনার দাম বেশ খানিকটা কমেছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার ছাড়ায়। ১০ ফেব্রুয়ারি তা আরও বেড়ে ২ হাজার ৯০০ ডলার আতিক্রম করে।
২১ ফেব্রুয়ারি প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৯৪০ ডলারে ওঠে। যা ছিল রেকর্ড।
শনিবার রাত সোয়া ৯টায় বিশ্ববাজারে প্রতিআউন্স সোনার দাম ২৭ ডলার ৩৪ সেন্ট কমে ২ হাজার ৮৫৭ ডলার ৯৩ সেন্টে নেমে এসেছে। শতাংশ হিসাবে কমেছে প্রায় ১ শতাংশ।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বাজুস যখন দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দেয়, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিআউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৮৭৯ ডলার ৯১ সেন্ট।
কমেন্ট