সোনার ভরি আবার দেড় লাখ ছাড়াল
তিন দফায় ৬ হাজার ১৮২ টাকা কমানোর পর মঙ্গলবার এক দিনেই এই মাসের সোনার দর ভরিতে ৩ হাজার ৫৫৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাজুস।
সোনার দাম আবার বাড়ল; ভরি দেড় লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। বুধবার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতিভরি সোনা ১ লাখ ৫১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হবে।
তিন দফায় ৬ হাজার ১৮২ টাকা কমানোর পর মঙ্গলবার এক দিনেই এই মাসের সোনার দর ভরিতে ৩ হাজার ৫৫৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
তিন দিন আগে শনিবার ২ হাজার ৬২৪ টাকা কমানো হয়েছিল; ভরি নেমেছিল ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৩ টাকায়।
তার আগে চড়তে চড়তে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২২ ক্যারেটের সোনার ভরি ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৫ টাকায় উঠেছিল। যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বাজারেও সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছিল। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়েছিল। টানা আট দফায় প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছিল ১৬ হাজার ২৩৬ টাকা।
এর পর ছয় দিনের ব্যবধানে তিন দফায় ৬ হাজার ১৮২ টাকা কমে সেই সোনার ভরি দেড় লাখ টাকার নিচে নেমে এসেছিল।
বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১৩ হাজার ২৩ টাকা লাগবে। ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতিভরি কিনতে লাগবে ১ লাখ ৫১ হাজার ৯০০ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৯৫ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ১ লাখ ২৪ হাজার ২৮০ টাকা।
আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ১ লাখ ২ হাজার ৩৭৫ টাকায়।
মঙ্গলবার পর্যন্ত এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১২ হাজার ৭১৮ টাকা লেগেছে। প্রতিভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৩ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৭৬ টাকা।
সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৮৯০ টাকায়।
হিসাব বলছে, তিন দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছে ৩ হাজার ৫৫৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছে ৩ হাজার ৩৯৪ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ২ হাজার ৯০৪ টাকা।
সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরির দাম বেড়েছে ২ হাজার ৮৮৪ টাকা।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা কমানো হয়েছিল। ২৩ ডিসেম্বর কমানো হয় ১ হাজার ২৪৮ টাকা।
১৯ ডিসেম্বর ২ হাজার ৮৮ টাকা বাড়ানো হয়েছিল; ১৫ ডিসেম্বর ১ হাজার ৭৭৩ টাকা কমানো হয়েছিল। ১২ ডিসেম্বর বাড়ানো হয় ১ হাজার ৮৭৮ টাকা।
এভাবে উঠানামার মধ্যে দিয়েই শেষ হয়েছিল ২০২৪ সাল। গত বছরে মূল্যবান এই ধাতুর দর ৩৫ বার বেড়েছিল; কমেছিল ২৭ বার।
তবে নতুন বছরে সোনার দাম টানা বাড়ছিল। প্রথম বাড়ে ১৫ জানুয়ারি, এরপর টানা আট বার বাড়ে। এরমধ্যে ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে বেড়েছিল তিন বার। আর চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ে পাঁচ বার।
এর পর বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশের বাজারেও সোনার দর নিম্মমূখী হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২২ ক্যারেটের দাম কমে ভরিতে ১ হাজার ১৫৫ টাকা। ২৭ ফেব্রুয়ারি ভরিতে ২ হাজার ৪০৩ টাকা কমানো হয়। ১ মার্চ কমানো হয় ২ হাজার ৬২৪ টাকা।
মঙ্গলবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
বিশ্ববাজারেও বেড়েছে
এদিকে বিশ্ববাজারেও সোনার দাম বেশ খানিকটা বেড়েছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার ছাড়ায়। ১০ ফেব্রুয়ারি তা আরও বেড়ে ২ হাজার ৯০০ ডলার আতিক্রম করে।
২১ ফেব্রুয়ারি প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৯৪০ ডলারে ওঠে। যা ছিল রেকর্ড।
মঙ্গলবার রাত ৯টায় বিশ্ববাজারে প্রতিআউন্স সোনার দাম ১৮ ডলার ৪৭ সেন্ট কমে ২ হাজার ৯১০ ডলার ১৬ সেন্টে উঠেছে। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে দশমিক ৬৪ শতাংশ।
গত ১ মার্চ রাতে বাজুস যখন দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দেয়, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিআউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৮৫৭ ডলার ৯৩ সেন্ট।
কমেন্ট