রবিবার থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতিভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৭ টাকায় বিক্রি হবে।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ১ লাখ ৭৮ হাজার টাকায় উঠেছিল সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার ভরি। এক দিনের ব্যবধানেই বেড়েছিল ৫ হাজার ৩৪২ টাকা।

বিশ্ববাজারে রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ায় দেশের বাজারেও সোনার দর দফায় দফায় বাড়াচ্ছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সেই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ এপ্রিল এক দিনের ব্যবধানেই ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস। অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে বাড়ানো হয়েছিল।

২৪ এপ্রিল সকাল থেকে সারা দেশে ওই দরে বিক্রি হচ্ছিল সোনা। কিন্তু বিশ্ববাজারে সোনার দামের পতন শুরু হওয়ায় ওই দিন বিকেলেই ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমানো হয়; ভরি নেমে আসে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকায়।

বিশ্ববাজারে সোনার দর আরও কমায় দশ দিন পর শনিবার রাতে এই সোনার দাম ভরিতে আরও ৩ হাজার ৫৭০ টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাজুস; ভরি নেমেছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৭ টাকায়।

অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছে।

শনিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। রোববার থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, রবিবার থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতিভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৭ টাকায় বিক্রি হবে। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হবে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩০১ টাকায়। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৫৩ টাকা।

আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরির দাম পড়বে ১ লাখ ১৪ হাজার ২৯৬ টাকা।

শনিবার পর্যন্ত ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ২১ ক্যারেট প্রতিভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকায়। ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকায়।

হিসাব বলছে, দশ দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেটে সোনার দাম কমেছে ৩ হাজার ৫৭০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটে ৩ হাজার ৩৯৫টাকা, ১৮ ক্যারেটে ২ হাজার ৯১৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম কমেছে ২ হাজার ৪৮৪ টাকা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর সোনার দাম হু হু করে বাড়ছিল। ৯ এপ্রিল তিন মাসের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপ স্থগিত করলে সোনার দাম একটু কমে আবার বাড়তে শুরু করে।

কারণ, পাল্টা শুল্ক স্থগিত হলেও ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক সব দেশের ওপর কার্যকর করা হয়।

বিশ্ব বাজারে গত ২২ এপ্রিল সোনার দাম প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) ৩ হাজার ৫০০ ডলার স্পর্শ করেছিল, যা ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের ওপর পাল্টা শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত দেওয়ার পাশাপাশি ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার হুমকি থেকে সরে আসায় সোনার দাম কমতে শুরু করে।

২৩ এপ্রিল রাতে বাজুস যখন দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় তখন বিশ্ব বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দর ছিল ৩ হাজার ২৮০ ডলার ৯ সেন্ট।

শনিবার (৩ এপ্রিল) রাত ১১টায় সেই সোনর দর আরও কমে ৩ হাজার ২৪১ ডলার ৩৬ সেন্টে নেমে এসেছে।

মূলত বিশ্ব বাজারে সোনার দামে পতন শুরু হওয়ায় দেশেও দাম কমিয়েছে জুয়েলার্স সমিতি। যদিও বাজুস বরাবরের মতো এবারও সরাসরি তা স্বীকার করেনি।

বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

রবিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।