এর আগে দুই দফায় ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে ৮ হাজার ৯১২ টাকা কমানো হয়েছিল; ভরি নেমেছিল ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৭ টাকায়।

সোনার দাম আরও বেড়েছে। এক দিনের ব্যবধানেই দেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ৬৬২ টাকা বাড়ানো হয়েছে; ভরি উঠেছে প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকায়। এ নিয়ে দুই দিনেই ভরিতে বাড়ল ৫ হাজার ৯৭১ টাকা।

এর আগে দুই দফায় ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে ৮ হাজার ৯১২ টাকা কমানো হয়েছিল; ভরি নেমেছিল ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৭ টাকায়।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ১ লাখ ৭৮ হাজার টাকায় উঠেছিল এই মানের সোনার ভরি। বিশ্ববাজারে রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ায় দেশের বাজারেও সোনার দর দফায় দফায় বাড়িয়েছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সেই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ এপ্রিল এক দিনের ব্যবধানেই ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস। অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে বাড়ানো হয়।

২৪ এপ্রিল সকাল থেকে সারা দেশে ওই দরে বিক্রি হচ্ছিল সোনা। কিন্তু বিশ্ববাজারে হঠাৎ করে সোনার দামের পতন হওয়ায় ওই দিন বিকেলেই ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমানো হয়; ভরি নেমে আসে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকায়।

বিশ্ববাজারে সোনার দর আরও কমায় দশ দিন পর গত ৩ মে এই সোনার দাম ভরিতে আরও ৩ হাজার ৫৭০ টাকা কমানো হয়; ভরি নামে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৭ টাকায়। অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে কমানো হয়।

কিন্তু বিশ্ববাজারে ফের ঊর্ধ্বমূখী হওয়ায় গত সোমবার (৫ মে) দেশের বাজারেও সোনার দাম আবার বাড়ানো হয়; ২২ ক্যারেটের দাম ভরিতে ২ হাজার ৩০৯ টাকা বাড়ে। ভরি উঠে ১ লাখ ৭১ হাজার ২৮৬ টাকায়।

এক দিনের ব্যবধানেই মঙ্গলবার (৬ মে) সোনার দাম আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের ভরি উঠেছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৪৮ টাকায়।

মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বুধবার থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, বুধবার থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতিভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৪৮ টাকায় বিক্রি হবে। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হবে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫ টাকায়। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৪১ টাকা।

আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরির দাম পড়বে ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা।

মঙ্গলবার পর্যন্ত ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৭১ হাজার ২৮৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪৯৪ টাকায়। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ৪০ হাজার ১৪৩ টাকা।

আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরির দাম ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৯০৫ টাকা।

হিসাব বলছে, দুই দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেটে সোনার দাম বেড়েছে ৩ হাজার ৬৬২ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটে ৩ হাজার ৫১১ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ২ হাজার ৯৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম বেড়েছে ২ হাজার ৫৫৪ টাকা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর সোনার দাম হু হু করে বাড়ছিল। ৯ এপ্রিল তিন মাসের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপ স্থগিত করলে সোনার দাম একটু কমে আবার বাড়তে শুরু করে।

কারণ, পাল্টা শুল্ক স্থগিত হলেও ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক সব দেশের ওপর কার্যকর করা হয়।

বিশ্ব বাজারে গত ২২ এপ্রিল সোনার দাম প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) ৩ হাজার ৫০০ ডলার স্পর্শ করেছিল, যা ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের ওপর পাল্টা শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত দেওয়ার পাশাপাশি ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার হুমকি থেকে সরে আসায় সোনার দাম কমতে শুরু করে।

২৩ এপ্রিল রাতে বাজুস যখন দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় তখন বিশ্ব বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দর ছিল ৩ হাজার ২৮০ ডলার ৯ সেন্ট। ৩ এপ্রিল সেই সোনর দর আরও কমে ৩ হাজার ২৪১ ডলার ৩৬ সেন্টে নেমে আসে।

৫ মে (সোমবার) রাত সাড়ে টায় বিশ্বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দর ছিল ৩ হাজার ৩১১ ডলার ৯৬ সেন্ট।

৬ মে (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দর ছিল ৩ হাজার ৩৯৫ ডলার ৮২ সেন্ট। বেড়েছে ৮২ ডলার ১ সেন্ট। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ।