আগস্টে রপ্তানি আয় বাড়লেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি

আগস্টে রপ্তানি আয় বাড়লেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি

জুলাই-আগস্ট সময়ে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প থেকে এসেছে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি।

বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের প্রধান দুই উৎস হচ্ছে রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স বড় ধাক্কা খেলেও রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সোমবার দুপুরে রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, আগস্ট মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে সব মিলিয়ে ৪৭৮ কোটি ২২ লাখ (৪.৭৮ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা।

এই অঙ্ক গত বছরের আগস্টের চেয়ে ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। তবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ কম।

এই মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ৪৮৭ কোটি (৪.৮৭ বিলিয়ন) ডলার। গত বছরের আগস্টে আয় হয়েছিল ৪৬০ কোটি ৭০ লাখ (৪.৬০ বিলিয়ন) ডলার।

দুই মাসের হিসাবে অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৯৩৭ কোটি ৫১ লাখ (৯.৩৭ বিলিয়ন) ডলার। যা গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেশি এসেছে দশমিক ২৬ শতাংশ।

গত অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে আয় হয়েছিল ৮ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-আগস্ট সময়ে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প থেকে এসেছে প্রায় ৮ বিলিয়ন (৭৯৯ কোটি ৮৬ লাখ) ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৪ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।

ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ৩ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার; গত বছরের একই সময়ের চেয়ে আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ৭ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৭ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার।

ইপিবির হিসাব বলছে, জুলাই-আগস্ট দুই মাসে মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫ দশমিক ৩১ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে।

তবে চামড়া, পাট, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত মাছ ও কৃষি পণ্যসহ অন্য সব খাতেই রপ্তানি আয় কমেছে।

রোববার রেমিটেন্সের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে দেখা যায়,আগস্টে ১৬০ কোটি (১.৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে। এই অঙ্ক গত ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।

গত ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি (১.৫৬ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগস্ট মাসে গত বছরের আগস্টের চেয়ে ২১ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম রেমিটেন্স দেশে এসেছে। আর আগের মাস জুলাইয়ের চেয়ে কম এসেছে ১৯ শতাংশ।

অন্যান্য খাত

অন্যান্য খাতের মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে হিমায়তি মাছ রপ্তানি কমেছে ২৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় কমেছে ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে কমেছে ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল রপ্তানি থেকে আয় কমেছে ৫৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।

তবে এই দুই মাসে ওষুধ রপ্তানি থেকে আয় ১৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি থেকে আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৬২ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার। এর মধ্যে ৮৪ দশমিক ৩০ শতাংশ (৫২ দশমিক ২৭ বিলিয়ন) ডলার তৈরি পোশাক থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে সব মিলিয়ে ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। এরমধ্যে ৪৭ বিলিয়ন ডলারই এসেছিল তৈরি পোশাক থেকে।

পোশাক রপ্তানির আড়ালে ১০ কোম্পানির ৩০০ কোটি টাকা ‘পাচার’ পূর্ববর্তী

পোশাক রপ্তানির আড়ালে ১০ কোম্পানির ৩০০ কোটি টাকা ‘পাচার’

সুখবর: কানাডায় ২০৩৪ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ পরবর্তী

সুখবর: কানাডায় ২০৩৪ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

কমেন্ট