গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন নারীর প্রতি অবমাননা, ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে বিজিএমইএ’র চিঠি
সংগঠনটি বলেছে, প্রতিবেদনে দেশের লাখো নারী শ্রমিকের সম্মানে কালিমা লেপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এ ধরনের স্পর্শকাতর প্রতিবেদন এর আগেও কয়েকবার প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান।
যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকায় বাংলাদেশের পোশাক খাতের নারী শ্রমিকদের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে অসত্য এবং বিকৃত বলে মনে করছে এ খাতের উদ্যোক্তা রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
সংগঠনটি বলেছে, প্রতিবেদনে দেশের লাখো নারী শ্রমিকের সম্মানে কালিমা লেপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এ ধরনের স্পর্শকাতর প্রতিবেদন এর আগেও কয়েকবার প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান।
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসব কথা বলেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের নেতিবাচক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে এ ব্যাপারে পত্রিকাটির সম্পাদকের কাছে বিষয়টি তুলে ধরতে হাইকমিশনারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
বুধবার পাঠানো চিঠির একটি অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর গার্ডিয়ানে বাংলাদেশি এক নারী পোশাক শ্রমিকের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাপনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রাতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন নারী পোশাক শ্রমিকরা।
ওই প্রতিবেদনে এক নারী শ্রমিকের জীবনকাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে রুবি রফিক (ছদ্মনাম) নামে ওই নারীর বিষয়ে বলা হয়, প্রতি রাতে সন্তানরা ঘুমিয়ে পড়লে বাসা থেকে বের হন তিনি। চলে যান কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত বাজারের দিকে। অভাবের তাড়নায় তিনি দিনে পোশাক শ্রমিক আর রাতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করেন।
বাংলাদেশে একাধিক পত্রিকায় গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুবাদ করে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি নজরে এলে বিজিএমইএর পক্ষ থেকেও প্রতিবাদ জানানো হয়। খবরটিকে মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার পোশাক খাতের শ্রমিক ইউনিয়নের সাত ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, বাংলাদেশ থেকে পোশাক শিল্প যাতে অন্য দেশে সরে যায়, সে উদ্দেশ্য থেকেই এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়। শ্রমিক নেতাদের দাবি, গার্ডিয়ানকে বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
বিজিএমইএর চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের পোশাক খাতকে উৎপীড়নের খাত হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য তুলে ধরা হয়নি।
“প্রকৃত সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশের লাখো নারীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পোশাক শিল্প। এর মাধ্যমে এসব নারী তাদের পরিবারকে সহযোগিতা করছে, ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তুলছে। সমাজে পিছিয়ে পড়া লাখো নারীর কর্মসংস্থানের একমাত্র খাত পোশাক শিল্পকে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।”
কমেন্ট