সোনার দর ফের চড়ছে, ২ দিনে বাড়ল ভরিতে ১৭৮৫ টাকা

সোনার দর ফের চড়ছে, ২ দিনে বাড়ল ভরিতে ১৭৮৫ টাকা

সোমবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ৯ হাজার ৫১২ টাকা লাগবে; এক ভরিতে লাগবে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৮ টাকা।

সোনার দাম ফের চড়ছে। টানা আট দফা কমানোর পর শনিবার সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দর ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়েছিল দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস। রবিবার বাড়ানো হয়েছে ৭৩৫ টাকা।

অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছে। রবিবার থেকে এই নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।

বাজুসের ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ৯ হাজার ৫১২ টাকা লাগবে; অর্থাৎ এক ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৮ টাকা (১ ভরিতে ১১.৬৬৪ গ্রাম)।

২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ৫ হাজার ৮৯৭ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ৯০ হাজার ৭৬৯ টাকা।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৭৫ হাজার ৪৮৯ টাকায়।

রবিবার পর্যন্ত হলমার্ক করা এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে কিনতে ৯ হাজার ৪৪৯ টাকা লেগেছে। এক ভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ১০ হাজার ২১৩ টাকা।

২১ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনা কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ১৯৮ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ৯০ হাজার ১৭৪ টাকা। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৭৪ হাজার ৯৮৮ টাকায়।

হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, এক দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছে ৭৩৫ টাকা। ২১ ক্যারেটের বেড়েছে ৭০০ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ৫৯৫ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম বেড়েছে ৫০১ টাকা।

এর আগে ১১ দিনে আট দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ২৬৬ টাকা কমানো হয়েছিল। শনিবার সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাজুস; ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়ানো হয়। রবিবার থেকে ওই দর কার্যকর হয়।

রবিবার সন্ধ্যায় আবার সোনার দাম বাড়িয়েছে বাজুস। এ দফায় বাড়ানো হয় ভরিতে ৭৩৫ টাকা। সোমবার থেকে এই দর কার্যকর হয়।

এ নিয়ে দুই দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৭৮৫ টাকা বাড়ানো হলো।

বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

টানা বাড়তে বাড়তে গত ১৮ এপ্রিল অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২২ ক্যারেট সোনার ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল। এর পর থেকেই দেশের বাজারে নিম্মমূখী হয় সোনার দর।

এর পর ১১ দিনে দুই শুক্রবার (২৬ এপ্রিল ও ৩ মে) এবং পহেলা মে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই কমেছে সোনার দর।

এই ১১ দিনে আট দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ২৬৬ টাকা কমানো হয়েছিল। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৮৭৮ টাকা কমানো হয়েছিল। ২১ ক্যারেটের কমে ১ হাজার ৮০৮ টাকা। ১৮ ক্যারেটের কমেছিল ১ হাজার ৫৫১ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম কমানো হয় ১ হাজার ২৮৩ টাকা।

এর আগে ২১ এপ্রিল দেশের বাজারে সোনার দর বাড়িয়েছিল বাজুস। ওইদিন প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বাড়ানো হয়েছিল ৬৩০ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছিল ৬০৬ টাকা; ১৮ ক্যারেটের ৫১৩ টাকা। সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম বেড়েছিল ৪২০ টাকা।

তার আগের দিন ২০ এপ্রিল সব ধরনের সোনার দাম খানিকটা কমানো হয়েছিল। সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের দাম কমানো হয়েছিল ভরিতে ৮৪০ টাকা। অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে কমানো হয়েছিল।

তার আগে ১২ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় সোনার দাম সাড়ে ৫ হাজার টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস।

এমনিতেই বেশ কিছু দিন ধরে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেশ চড়া ছিল। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ডামাডোলে তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়। প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম প্রায় ২ হাজার ৪০০ ডলারে উঠেছিল।

তবে মাঝে বেশ খানিকটা কমেছিল। দুই-তিন দিন ধরে ফের বাড়তে শুরু করেছে। রবিবার সোনার আন্তর্জাতিক বাজার বন্ধ্য ছিল। আগের দিনের প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ৩০২ ডলার ৫৭ সেন্টে বিক্রি।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজুস যখন সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দেয়, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ২৮৯ ডলার ৭৫ সেন্ট।

বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।

কোভিড মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।

ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতায় মূল্যবান এই ধাতুর দাম পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকে।

রোজার ঈদের আগে দেশের বাজারে দুই দিনের ব্যবধানে সবচেয়ে ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।

৬ এপ্রিল বাড়ানো হয়েছিল ভরিতে ১ হাজার ৭৫০ টাকা। দুদিন বাদে ৮ এপ্রিলও বাড়ানো হয় ১ হাজার ৭৫০ টাকা।

ঈদের পর গত ১৮ এপ্রিল আবার বাড়ানো হয়েছিল দাম। সেই দফায় বাড়ানো হয় ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা। তাতে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ভরি ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় উঠেছিল, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড দর।

নিট পোশাকে ভর করেই প্রবৃদ্ধি রপ্তানি আয়ে পরবর্তী

নিট পোশাকে ভর করেই প্রবৃদ্ধি রপ্তানি আয়ে

কমেন্ট