বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হংকংভিত্তিক এপিক গ্রুপকে ঋণ দিচ্ছে আইএফসি

বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হংকংভিত্তিক এপিক গ্রুপকে ঋণ দিচ্ছে আইএফসি

এপিক গ্রুপের নির্বাহী চেয়ারম্যান রঞ্জন মাহতানি ও আইএফসির এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরের ভাইস প্রেসিডেন্ট রিকার্ডো পুলিতি। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাংকের বেসরকারি খাতবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) হংকংভিত্তিক বস্ত্র ও তৈরি পোশাক সরবরাহকারী বৈশ্বিক কোম্পানি এপিক গ্রুপকে ১০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে।

বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১১৮ কোটি ডলার) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।

এর মধ্যে ৭ কোটি ডলার দেওয়া হচ্ছে টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য। আর বাকি ৩ কোটি ডলার দেওয়া হচ্ছে পরিবেশবান্ধব উৎপাদনে। এই ঋণ এপিক গ্রুপের বাংলাদেশে কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও ভারতে নতুন কারখানা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে।

এই অর্থ বাংলাদেশে এপিক গ্রুপের সম্প্রসারণ এবং ভারতে একটি নতুন উৎপাদন কারখানা নির্মাণে সহায়তা করবে। এছাড়া এপিক গ্রুপ বাংলাদেশে তাদের ওয়াশিং ও তরল বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্টের উন্নতি এবং জ্বালানি ও পানি ব্যবহার কমানোর প্রযুক্তি ও সরঞ্জামে বিনিয়োগ করতে এ অর্থ ব্যবহার করবে।

বুধবার আইএফসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের বস্ত্র খাতে টেকসই উৎপাদন এবং এ খাতে সম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা বাড়াতে আইএফসি বৈশ্বিক তৈরি পোশাক খাতের নেতৃত্বস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এপিক গ্রুপের সঙ্গে অংশীদারিত্ব ঘোষণা করেছে। এ অর্থায়ন উৎপাদন খাতে টেকসই-সংযুক্ত বৈশিষ্ট্যসহ আইএফসির প্রথম সবুজ ঋণ, যা এপিক গ্রুপকে বাংলাদেশ এবং ভারতে ১০ হাজার ৫০০ জনের বেশি প্রত্যক্ষ এবং ১৭ হাজার জনের বেশি পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

“তিনটি উচ্চাভিলাষী কর্পোরেট টেকসই কর্মক্ষমতা লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে এ অর্থায়ন সম্পর্কিত। এগুলো হলো— উৎপাদন প্রক্রিয়ায় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের তীব্রতা কমানো, মিঠা পানির ব্যবহার কমানো এবং নিম্ন ও মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপনায় নারীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো।”

এপিক গ্রুপ বস্ত্র শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান; প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ, জর্ডান, ইথিওপিয়া, ভিয়েতনাম ও ভারতে উৎপাদন সুবিধা রয়েছে। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এপিক গ্রুপ বিশ্বব্যাপী তৈরি পোশাকের খুচরা বিক্রেতাদের জন্য বিশ্বস্ত প্রস্তুতকারক এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। গ্রুপের প্রধান কার্যালয় হংকংয়ে। ৩০ হাজারের বেশি কর্মী থাকা এপিক গ্রুপের হংকং, ঢাকা, আম্মান, নিউইয়র্ক, লন্ডন এবং দুবাইতে কার্যালয় রয়েছে।

আইএফসির এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরের ভাইস প্রেসিডেন্ট রিকার্ডো পুলিতি বলেন, আইএফসি এশিয়াজুড়ে বস্ত্র ও পোশাক খাতে একটি শক্তিশালী ভ্যালু চেইনে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। টেকসই চর্চার মাধ্যমে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় দক্ষতা বাড়াতে এপিক গ্রুপের মতো নেতৃত্বস্থানীয় তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় আইএফসির অর্থায়ন বাংলাদেশ এবং ভারতের বস্ত্র খাতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াবে।

“বস্ত্র খাতকে আরও টেকসই এবং প্রতিযোগী সক্ষমতা করা এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতার চাবিকাঠি।”

এপিক গ্রুপের নির্বাহী চেয়ারম্যান রঞ্জন মাহতানি বলেন, “আইএফসির সঙ্গে অংশীদারিত্ব অধিকতর টেকসই এবং উদ্ভাবনী বস্ত্র উৎপাদন শিল্পের পথে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এ সহযোগিতা শুধু বাংলাদেশ এবং ভারতে আমাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের সুযোগ দিচ্ছে তা নয়, পাশাপাশি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব কমাতে এবং সম্পদের দক্ষ ব্যবহারে আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়ক।”

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বস্ত্র খাত প্রতিবছর বিশ্বের মোট কার্বন নির্গমনে ৬ থেকে ৮ শতাংশ অবদান রাখে। যার মধ্যে এশিয়াতে প্রায় ৬০ শতাংশ অংশীদার। এ খাত বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যার মাধ্যমে রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে।

চামড়া খাতে সুদিন কি ফিরবে পরবর্তী

চামড়া খাতে সুদিন কি ফিরবে

কমেন্ট