সোমবার থেকেই পেঁয়াজ আমদানি

সোমবার থেকেই পেঁয়াজ আমদানি

শেষ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। সোমবার থেকে যে কোনো দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন আমদানিকাররা।

দেশের বাজারে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রায় মাস ধরে এই চড়া দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

এই দামের লাগাম টেনে ধরতে গত দুই সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছিল। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছিলেন।

শেষ পর্যন্ত রোববার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের, শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পেঁয়াজ আমদানি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ শাখা থেকে আমদানির অনুমতি বা আইপি নিতে হয়। কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে পেঁয়াজ আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছিল মন্ত্রণালয়।

এর মধ্যে বাজারে পেঁয়াজের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, রোববার ঢাকার বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এই দাম ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।

আর গত মাসের এই সময়ে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ৪০ টাকার মতো বেড়েছে। টিসিবির তথ্যমতে, গত বছর এই সময়ে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত দুই বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টনেরও বেশি। এ বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। বর্তমানে মজুত আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে বা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন।

বর্তমানে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ ২৮ থেকে ৩০ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি উন্মুক্ত থাকায় পেঁয়াজ আমদানি বেশি হয়েছিল। তখন দেশি পেঁয়াজের বাজারদর কম ছিল, প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ছিল। কৃষকেরা কম দাম পেয়েছিলেন। সে জন্য পেঁয়াজ চাষে কৃষকের আগ্রহ ধরে রাখতে এবার আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছিল কৃষি মন্ত্রণালয়।

২০১৯ সালের নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতের পর পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে এক থেকে দুদিনের মধ্যে দেড়শ থেকে ১৮০ টাকায় উঠে যায়। এরপর সপ্তাহ না হতেই দাম বেড়ে আড়াইশ টাকায় উঠে যায় পেঁয়াজের কেজি। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওটাই ছিল পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দর। নতুন পেঁয়াজ ওঠায় পরে অবশ্য তা কমে আসে।

 

 

 

৪২৫ আমদানি পণ্যের শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব পরবর্তী

৪২৫ আমদানি পণ্যের শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব

কমেন্ট

এই সংক্রান্ত আরও খবর